ঢাকার ধামরাইয়ে প্রায় ৪৫ বছরের পুরনো একটি সরকারি রাস্তা গত ৬দিন ধরে ভেকু মেশিন (যন্ত্রদানব) দিয়ে কেটে খাল ভরাট করছে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল। ধামরাইয়ের গোমগ্রাম বাজার থেকে দক্ষিণ গোমগ্রাম পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার এলাকার এ সরকারি রাস্তা কাটার ফলে ট্রাকসহ সকল প্রকার যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে ধামরাই ও মির্জাপুর উপজেলার প্রায় ৪০টি গ্রামের মানুষের চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পরও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী ধামরাইয়ের যাদবপুর ইউনিয়নের গোমগ্রাম বাজার থেকে ধামরাইয়ের হরিদাসপুর পর্যন্ত প্রায় ৬ কিলোমিটার এলাকায় ১৯৯১ সালে সরকারি টাকায় সরকারি খালের পাশ দিয়ে ব্যক্তিমালিকানাধীন জমির ওপর দিয়ে কাঁচা রাস্তা নির্মাণ করা হয়। এরআগে স্বাধীনতার আগে থেকেই এখান দিয়ে পায়ে হাটার রাস্তা ছিল। এরইমধ্যে কয়েক কিলোমিটার রাস্তা পাকাও করা হয়েছে। বর্তমানে এ রাস্তা দিয়ে মির্জাপুর ও ধামরাইয়ের যাদবপুর, বাইশাকান্দা, বালিয়া ও কুশুরাসহ ১০-১২টি ইউনিয়নের প্রায় ৪০ গ্রামের মানুষ ধামরাই সদরসহ ঢাকায় যাতায়াত করেন।
স্থানীয় লোকজন জানান, সরকারি খালের ওপর দিয়ে রাস্তা নির্মাণ করে দেওয়ার কথা বলে প্রশাসনের ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কোনরকম অনুমতি ছাড়াই গোমগ্রামের শাজাহান মিয়া, সবুজ, বোরহান, বাহাদুরসহ কয়েকজন প্রভাব খাটিয়ে গত শুক্রবার থেকে খনন যন্ত্র ভেকু মেশিন দিয়ে প্রকাশ্যে সরকারি রাস্তার মাটি কেটে সরকারি খাল ভরাট করছেন। এতে ওই রাস্তায় চলাচলকারী ট্রাক, প্রাইভেটকার, অটোরিকশাসহ সকল প্রকার যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। স্থানীয় লোকজন বাধা দিলে তাদের সঙ্গে বাকবিতন্ডার সৃষ্টি হচ্ছে।
স্থানীয় যাদবপুর ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী ইছাক বলেন, সম্প্রতি গোমগ্রাম বাজার থেকে গোমগ্রাম দক্ষিণপাড়া পর্যন্ত ১১৬৩ ফুট ওই কাচা রাস্তায় ইট সলিংয়ের জন্য উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস থেকে ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়। ঠিকাদার সুুব্রত পাল ইট সলিংয়ের কাজও শুরু করেন। একদিন কাজ করার পরই গোমগ্রামের শাজাহান মিয়া, সবুজ, বোরহান, বাহাদুরসহ কয়েক ব্যক্তি বাধা দিয়ে কাজ বন্ধ করে দেন এবং গত শুক্রবার থেকে ওই রাস্তার মাটি ভেকু দিয়ে কেটে সরকারি খাল ভরাট করছেন। এতে মহাদুর্ভোগে পড়েছেন ওই রাস্তায় চলাচলকারীরা। পরে আমি গত রবিবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
এ বিষয়ে গোমগ্রামের অভিযুক্ত শাজাহান মিয়া বলেন, রাস্তাটি ব্যক্তি মালিকানাধীন জমির ওপর দিয়ে করা হয়েছিল। তাই আমরা জমির মালিকগণ ব্যক্তিগত উদ্যোগ নিয়ে রাস্তাটি সরিয়ে দেওয়ার জন্য রাস্তার মাটি কেটে সরকারি খালের ওপর দিয়ে করার চেষ্টা করছি। চলাচলে মানুষ দুর্ভোগ পোহালে আমাদের কিছু করার নেই।
এ বিষয়ে ধামরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হোসাইন মোহাম্মদ হাই জকী সাংবাদিকদের বলেন, বিষয়টি আমি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল