টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে এক নারীকে হত্যার ঘটনায় পাঁচদিনের মধ্যে রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
হত্যাকাণ্ডের শিকার নাজমা বেগম (৩১) ভোলা জেলার লালমোহন উপজেলার দেবীর চর এলাকার আব্দুর রহমানের মেয়ে। হত্যায় সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে ওই নারীর স্বামী ওয়াসিম হককে (৪০) গ্রেফতার করেছে পিবিআই। ওয়াসিম দিনাজপুর জেলার খানসামা থানার ডাঙ্গারপাড়া গ্রামের ইছা হক মিয়ার ছেলে।
বুধবার সকালে সংবাদ সম্মেলনে টাঙ্গাইল পিবিআই’র পুলিশ সুপার সিরাজ আল মাসুদ এসব তথ্য জানান।
পুলিশ সুপার সিরাজ আল মাসুদ বলেন, জেলার মির্জাপুর উপজেলার আজগনা ইউনিয়নের ঘাগড়া এলাকার একটি কলাবাগানে গত ১৭ ডিসেম্বর অজ্ঞাত এক নারীর অর্ধগলিত লাশ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের হয়। পরে পিবিআই টাঙ্গাইল জেলা এই হত্যা মামলার ছায়া তদন্ত করে। প্রথমে এ হত্যার কোনও সূত্র আমাদের কাছে ছিল না। পরবর্তীতে তথ্য প্রযুক্তি ও বিভিন্ন গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায় হত্যাকারী হল নিহতের দ্বিতীয় স্বামী ওয়াসিম। গত মঙ্গলবার রাতে দিনাজপুর থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারের পর ওয়াসিম পুলিশকে জানায়, ২০১৯ সালে মোহাম্মদপুর ঢাকা উদ্যানের পাশে একটি ইট ভাটায় কাজ করার সময় নাজমা বেগমের সাথে তার পরিচয় হয়। নাজমা ওই ইট ভাটায় বাবুর্চির কাজ করতেন। সে সময় নাজমার সাথে ওয়াসিমের প্রেমের সর্ম্পক গড়ে ওঠে। পরে ২০২০ সালে করোনা মহামারীর কারণে ইট ভাটার কাজ বন্ধ হয়ে যায়। তখন ওয়াসিম নিজ এলাকা দিনাজপুর চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। একথা শুনে নাজমা ওয়াসিমকে ঢাকা উদ্যানে দেখা করার কথা বলে। পরে নাজমার ভাড়া বসায় নিয়ে যান ওয়াসিমকে। সেখানে নাজমা ও তার লোকজন জোরপূর্বক ওয়াসিমের সাথে তাদের বিয়ে পড়ায় এবং তিন লাখ টাকা দেনমোহর ধার্য্য করে। পরবর্তীতে চলতি বছরের ১১ ডিসেম্বর টাঙ্গাইল জেলার মির্জাপুর ইট ভাটায় নাজমা বেগম ওয়াসিমের সাথে দেখা করতে আসেন। সেখানে দুইজনের কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে নাজমা তাকে দেনমোহরের তিন লাখ টাকা ও ডিভোর্স চায়। ওয়াসিম টাকা দিতে অস্বীকার করলে তিনি মামলা করার ভয় দেখান। এ নিয়ে দু’জনের মধ্যে আরও ঝগড়া হয়। পরে ইট ভাটার পাশে কলাবাগানে ওয়াসিম নাজমার গলায় থাকা উড়না দিয়ে পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন এবং লাশ গুম করার জন্য কলাবাগানের ভিতর মাটি চাপা দিয়ে পালিয়ে যান।
বিডি প্রতিদিন/কালাম