ঝিনাইদহ সদর উপজেলায় চতুর্থ ধাপে গান্না ইউপি নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার অভিযোগে ৩ জনকে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে নৌকার প্রার্থীর সমর্থকদের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল বুধবার (২২ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে স্থানীয় বেতাই গ্রামে। আহতদের উদ্ধার করে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এ নিয়ে এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। যে কোনও সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী নাসির উদ্দিন মালিতা অভিযোগ করে বলেন, তার নির্বাচনী কাজে নিয়োজিত পোড়া বেতায় গ্রামের তোতা মন্ডল (৫০), একই গ্রামের তারেক হোসেন (৩৪) ও সোহাগ (২৫) তার পক্ষে ভোট চেয়ে বাড়ি ফিরছিল। গ্রামের মধ্যে পৌঁছান মাত্রই নৌকা প্রার্থী আতিকুল হাসান মাসুমের সমর্থক বহিরাগত সন্ত্রাসীরা সশস্ত্র অবস্থায় তাদের উপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে তাদেরকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করে। ওই সময় খবর পেয়ে আমার আরেক সমর্থক জাহাঙ্গীর আলম মোটরসাইকেল যোগে ঘটনাস্থলে গিয়ে পৌঁছালে তার মোটরসাইকেলটি ভাঙচুর করা হয়। পুলিশের সামনে ঘটনাটি ঘটে। কিন্তু পুলিশ সেখানে নিরব ভূমিকা পালন করে।
তিনি আরও অভিযোগ করে জানন, নৌকা প্রার্থী আতিকুল হাসান মাসুম দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার পর থেকে এলাকায় প্রভাব বিস্তার করতে শুরু করে। প্রথম থেকে তার দলীয় নেতাকর্মী সমর্থকদের মারধর, নির্বাচনী অফিস ভাঙচুর ও ভয়ভীতি দেখিয়ে আসছে। বারবার প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দিলেও তার বিরুদ্ধে এখানো কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।
তবে এ সম্পর্কে নৌকা প্রার্থী আতিকুল হাসান মাসুম বিষয়টি অস্বীকার করে জানান, এখন আমি বাড়ি বাড়ি ভোট চাওয়া নিয়ে ব্যস্ত রয়েছি। কোথায় কি ঘটছে তা আমি সঠিক ভাবে জানতে পারছি না। পরে আমি খোঁজখবর নেওয়ার পর নিশ্চিত করে বলতে পারবো।
এ ব্যাপারে সহকারী পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আবুল বাশার জানান, এ ঘটনায় আমাদের কাছে এখন পর্যন্ত কেউ কোন অভিযোগ করেনি। অভিযোগ দিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উল্লেখ্য, ২০০৩ সালের গান্না ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে শৈলমারী কুটিদুর্গাপুর গ্রামের কদমতলায় সন্ধ্যা ৭টার দিকে তৎকালিন চেয়ারম্যান প্রার্থী শরাফত হোসেনের ৫ কর্মীকে ব্রাশফায়ার করে হত্যা করা হয়। সেই সময় ওই ইউপিতে শরাফতের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছিলেন সাবেক চেয়ারম্যান ওহাব বিশ্বাস। এবারও একই রকম উত্তেজনা বিরাজ করছে এই ইউপিতে।
জেলা নির্বাচন অফিসের তথ্যমতে- আগামী ২৬ ডিসেম্বর ১৫টি ইউপিতে ২ লাখ ৫৩ হাজার ৫০০ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ২৭ হাজার ৬৮৮ জন আর নারী ভোটার ১ লাখ ২৫ হাজার ৮১২ জন।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ আল সিফাত