লালমনিরহাটে কার্যালয়ের জন্য কেনা জমি গোপনে বিক্রির অভিযোগে দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন পরিবহন শ্রমিকরা। এ নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে চারদিন ধরে কয়েক দফায় সংঘর্ষে জড়িয়েছেন তারা। বুধবার সকালেও শহরে দু’পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
চারদিন ধরে দফায় দফায় সংঘর্ষ ও ভাঙচুরের জেরে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে লালমনিরহাটে। এ সময় চারটি কাউন্টার ভাঙচুর করা হয়। যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে কঠোর অবস্থানে রয়েছে পুলিশও। বাসস্ট্যান্ড এলাকায় সার্বক্ষণিক মোতায়েন রয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিনের পুরাতন কমিটি দিয়ে চলছে লালমনিরহাট বাস মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়ন। পুরাতন কমিটির সভাপতি ও সম্পাদক শ্রমিকদের কার্যালয়ের জন্য কেনা জমি গোপনে বিক্রি করে দিয়েছেন। এমন গুজব ছড়িয়ে গেলে সাধারণ শ্রমিকদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয় এবং দুটি ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েন শ্রমিকরা।
জানা যায়, শ্রমিকদের একটি পক্ষের নেতৃত্বে রয়েছেন শ্রমিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক জাকির হোসেন ও কোষধ্যক্ষ আনায়ারুল হক দুলু। অপর পক্ষের নেতৃত্বে রয়েছেন বর্তমান কমিটির সভাপতি আমিনুল ইসলাম ও সম্পাদক বুলবুল আহমেদ।
জমি বিক্রির দলিল দিয়ে গত ৬ মার্চ সাধারণ শ্রমিকরা সদর থানায় সভাপতি ও সম্পাদকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন। এছাড়া পুরনো ও মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি বিলুপ্তের দাবিতে ২০ মার্চ দুপুরে শহরে বিক্ষোভ মিছিল করেন সাধারণ শ্রমিকরা। এ সময় বর্তমান কমিটি বাধা দিলে দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে পাঁচজন আহত হন। ওই দিন রাত ৮টার দিকে বর্তমান কমিটির কয়েকজন শ্রমিক শহরে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেন। মিছিলে থাকা শ্রমিকরা পুলিশ লাইনসের সামনে বিনিময় ফিলিংস স্টেশনের অফিসে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেন। এরপর থেকে প্রতিদিনই ঘটছে সংঘর্ষ।
এদিকে, মঙ্গলবার রাতে বাস টার্মিনালে মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সম্পাদক বুলবুল আহমেদের ওপর হামলা করে সাংগঠনিক সম্পাদক জাকির হোসেন ও কোষাধ্যক্ষ আনোয়ারুল হক দুলুর অনুসারীরা। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে বুলবুলের সমর্থকরা মিছিল বের করে কয়েকটি পরিবহনের কাউন্টারে ভাঙচুর করেন। এ ঘটনার জেরে পুনরায় সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে দুই পক্ষের লোকজন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। তবে পুরো শহরজুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। যেকোনো সময় ঘটতে পারে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা।
এ বিষয়ে লালমনিরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ আলম জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। ফের সংঘর্ষ এড়াতে শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই