বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের দুবলার চরের পাঁচ মাসের শুঁটকি তৈরীর কর্মজজ্ঞ প্রায় শেষের পথে। গত দুই-তিন দিন ধরে শুঁটকি উৎপাদনকারী পাঁচটি চরের জেলে-মহাজনরা তাদের থাকার অস্থায়ী ঘর, শুঁটকি শুকানোর মাচা, শুঁটকি সংরক্ষণের ঘরসহ সবকিছু গুঁটিয়ে চর ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বাড়ি ফেরার প্রথম যাত্রা শুরু করেছে জেলেরা।
সুন্দরবন বিভাগ জানিয়েছে, প্রথম যাত্রায় আলোরকোল, মাঝের কিল্লা, নারকেলবাড়িয়া, মেহের আলীর চর, শ্যালার চরসহ পাঁচটি চর থেকে চার শতাধিক ট্রলার ছেড়ে গেছে। একেকটি ট্রলারে ১০-১২ জন করে জেলে রয়েছেন। তাতে প্রায় পাঁচ হাজার জেলে চর ছেড়েনে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে, এবছর শুঁটকি উৎপাদনের পরিমাণ এবং এই খাত থেকে কি পরিমাণ রাজস্ব আয় হয়েছে সেই হিসাব এখন পর্যন্ত করা হয়নি।
আলোরকোল শুঁটকি পল্লীর দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ফরেস্টার) দিলিপ মজুমদার বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মুঠোফোনে জানান, শুঁটকি উৎপাদনের সবচেয়ে বড় চর হচ্ছে আলোরকোল। এখানে শুঁটকি সংরক্ষণ ও বসতঘর ৭৭৬টি ঘর রয়েছে। জেলে-মহাজন মিলিয়ে রয়েছে ৮হাজার ৩০০জন। এর মধ্য থেকে একদিনেই তিন সহস্রাধিক জেলে চলে গেছেন। বাকিরা প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
দুবলা জেলে পল্লী টহল ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রহ্লাদ চন্দ্র রায় জানান, মৌসুম শেষ হতে আর কয়েকদিন বাকি। ৩১ মার্চের মধ্যে সমস্ত চর থেকে জেলে-মহাজনরা চলে যাবেন। প্রথমবারে (বৃহস্পতিবার) পাঁচ হাজারের মতো জেলে বাড়ির উদ্দেশে রওনা হয়েছেন। অন্যরাও প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
দুবলা টহল ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রহ্লাদ চন্দ্র রায় আরো জানান, মৌসুম শেষ হলেও ব্যবসায়িক হিসাব শেষ হয়নি মহাজনদের। একারণে শুটকির উৎপাদন ও রাজস্বের পরিমাণ এখন পর্যন্ত নিরুপণ করা সম্ভব হয়নি। সঠিক সঠিক হিসাব পেতে আরো কয়েকদিন সময় লাগবে।
উল্লেখ্য, প্রতিবছর ১ নভেম্বর থেকে শুরু হয় পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের দুবলার চর জেলে পল্লীর আওতাধীন পাঁচটি চরে শুঁটকি উৎপাদন। চলে ৩১ মার্চ পর্যন্ত। এবছর জেলে, মহাজন ও অন্যান্য ব্যবসায়ী মিলিয়ে প্রায় ১৫ হাজার মানুষ অবস্থান করছে পাঁচটি চরে। এজন্য বনবিভাগ থেকে জেলে ও মহাজনদের থাকার ৯৮৫টি অস্থায়ী ঘর এবং ৬৬টি ডিপো ঘরের অনুমোদন দেওয়া হয়।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন