পঞ্চগড়ের বেশ কিছু এলাকায় বাড়ির মেঝেগুলো ভিজে যাচ্ছে ভূগর্ভস্থ পানিতে। কোন কোন বাড়ির মেঝেতে পানি জমে যাচ্ছে। হঠাৎ করেই এমন ঘটনায় বিস্মিত অনেকে। আতঙ্কেও ভুগছেন তারা। তবে আবহওয়াবীদরা বলছেন, ভুগর্ভস্থ তাপমাত্রা বেড়ে যাবার কারণেই এমনটা ঘটছে। এর কোনও সমাধান না থাকলেও আতঙ্কের কিছু নেই।
পৌর শহরের ডোকোরোপাড়া এলাকার আইনজীবী ও বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন পঞ্চগড় জেলা শাখার আহ্বায়ক এ কে এম আনোয়ারুল ইসলাম খায়েরের বাড়ির টাইলসের মেঝে বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) দুপুর ১২ টা থেকে ভেজা ভেজা লাগতে শুরু করে। তার পরিবারের লোকজন প্রথমে কিছু বুঝতে পারেননি। এরপর পানি জমতে শুরু করলে তারা আতঙ্কিত হয়ে ওঠেন। তারা আশে পাশের বাড়িগুলোতে খোঁজ নিতে শুরু করেন । প্রায় প্রত্যেক বাড়ির মেঝেগুলো ভেজা। কোনও কোনও মেঝেতে হাফ ইঞ্চি পানি জমে গেছে। খালি পায়ে হাঁটলে ভিজে যাচ্ছে পা। তারা বলছেন- গত কয়েকদিন থেকেই এমন অবস্থা বিরাজ করছে। খালি পায়ে মেঝেতে হাঁটা যাচ্ছেনা। কোন কোন ঘরে প্রবেশও করা যাচ্ছেনা। প্লাষ্টার করা বা টাইলসের মেঝেতেই এমন অবস্থা লক্ষ্য করা যাচ্ছে বেশি।
আনোয়ারুল ইসলাম খায়ের জানান, আশেপাশের কয়েকটি বাড়ির মেঝেতে পানি উঠতে দেখে আমি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোষ্ট দেই। জেলার বিভিন্ন উপজেলার অনেকেই কমেন্টে লিখেছেন তাদের বাড়িতেও একই অবস্থা। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবেই হয়তো এমন ঘটনা ঘটছে। কিন্তু আতঙ্কে আছেন সবাই ।
তবে আতঙ্কের কিছু নেই বলে আশ্বস্থ করেছে তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিস। এই অফিসের আবহাওয়া উচ্চ পর্যবেক্ষক জিতেন্দ্র নাথ রায় বলছেন, পঞ্চগড়ের মাটির নিচে অনেক পাথর, বালি থাকার কারণে ভূগর্ভস্থ তাপমাত্রা বেড়ে গেছে। সেই তুলনায় উপরিভাগের তাপমাত্রা কম। অতিরিক্ত তাপমাত্রার কারনে মাটির নিচের পানি উপরিভাগে উঠে আসতে পারে। তবে এমন ঘটনা শুধুমাত্র পাকা বাড়িতেই দেখা যাবে বেশি। এর কারণ পাকা বাড়ি নির্মিত হয় ইট সিমেন্ট দিয়ে। এসব বাড়িতে মেঝেগুলোতে তাপমাত্রা আরও বেড়ে যায়। তাই অনেকে সময় মেঝে ভিজে যায়।
তিনি আরও জানান, বর্তমানে পঞ্চগড়ের ভূগর্ভে ২৮ থেকে ৩৭ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা বিরাজ করছে। উপরিভাগে বিরাজ করছে ১৬ থেকে ২০ সেলসিয়াস। বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবেই এ ঘটনা ঘটছে। পঞ্চগড়ে আগামী ২৫ এপ্রিল থেকে তাপমাত্রা বেড়ে যাবে। ২৫ থেকে ৪০ সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপমাত্রা বিরাজ করতে পারে। তাই এবার আবহাওয়ায় গরম বেশি পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ
