ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি বলেছেন, বাংলাদেশের পরবর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত ভারত। আগামী নির্বাচনের পর জনগণের সমর্থন নিয়ে যারাই ক্ষমতায় আসুক তাদের সঙ্গেই গভীর সম্পর্ক রাখতে আমরা আগ্রহী।
গতকাল ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ঢাকা থেকে যাওয়া সাংবাদিক প্রতিনিধিদলের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন। ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বলেন, বাংলাদেশে দ্রুত নির্বাচন দেখতে আগ্রহী ভারত, যেখানে জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটবে। ভারত প্রত্যাশা করে বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু, অন্তর্ভুক্তি ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হবে। আগামী নির্বাচনের পর জনগণের সমর্থন নিয়ে যারাই ক্ষমতায় আসুক তাদের সঙ্গেই গভীর সম্পর্ক রাখতে আমরা আগ্রহী। নির্বাচনে অংশগ্রহণমূলক বলতে সব রাজনৈতিক দল না জনগণের অংশগ্রহণ- এমন প্রশ্নের উত্তরে বিক্রম মিশ্রি বলেন, এটা বাংলাদেশের জনগণ ঠিক করবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে বর্তমানে এমন একটা সরকার যেটার সংবিধানে কোনো ব্যাখ্যা নেই, তার পরও এ সরকারের সঙ্গে কাজ করছে ভারত। ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর ভারতই প্রথম অভিনন্দন জানিয়েছিল। তবে ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে ভবিষ্যৎমুখী সম্পর্ক চায়। শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠাতে বাংলাদেশ সরকারের আহ্বান প্রসঙ্গে বিক্রম মিশ্রি বলেন, এটি একটি আইনি ও বিচারিক প্রক্রিয়া। এর জন্য দুই দেশের সরকারের মধ্যে যোগাযোগ এবং পরামর্শ প্রয়োজন। আমরা এ বিষয়গুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছি।
ভারত আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনাকে পুনর্বহাল করার চেষ্টা করছে কি না- জানতে চাইলে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, আমরা কেবল বাংলাদেশে আগামী নির্বাচনের পক্ষে, যাতে বাংলাদেশের জনগণ নির্বাচিত সরকারের কাছে তাদের আকাঙ্ক্ষা প্রতিফলনের সুযোগ পায়। ভিসা ইস্যু নিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশে আমাদের একটি খুব বড় ভিসা কার্যক্রম রয়েছে। গত বছরের জুলাই এবং আগস্টের ঘটনার আগে যে স্তরে ছিল, এখন সেই স্তরে নেই। বর্তমানে আমাদের ভিসা কার্যক্রম আগের চেয়ে অনেক বেশি বেড়েছে। আগামী দিনেও এ কার্যক্রম বাড়বে।
গঙ্গার পানি চুক্তি এবং তিস্তা প্রকল্প নিয়ে জানতে চাইলে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বলেন, এ দুটি বিষয়ে দুই দেশের মধ্যে যৌথ কর্মপ্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। সীমান্ত হত্যাকাণ্ড নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের ৪ হাজার কিলোমিটারের মতো সীমান্ত রয়েছে। নিরাপত্তা, মাদক চোরাচালান, অবৈধভাবে অনুপ্রবেশকারীদের জন্য ভারতীয় সীমানায় এমন ঘটনা ঘটে। ভারতীয় সীমান্ত বাহিনী নিজের ভূখণ্ডের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে থাকে। এ সময় ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল, যুগ্ম সচিব (বাংলাদেশ ও মিয়ানমার) বি. শ্যাম উপস্থিত ছিলেন।