চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের তিন বিজ্ঞানী। তারা হলেন মেরি ই ব্রাঙ্কো, ফ্রেড র্যামসডেল ও শিমন সাকাগুচি। ইমিউন সিস্টেমের মৌলিক প্রক্রিয়া ‘পেরিফেরাল ইমিউন টলারেন্স’ সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কারের জন্য তারা এ স্বীকৃতি পেয়েছেন। গতকাল এই নোবেল পুরস্কার ঘোষণা করা হয়। সূত্র : রয়টার্স।
১৯৯৫ সালে গবেষণার জগতে প্রচলিত ধারণার বিরুদ্ধে গিয়ে প্রথম বড় আবিষ্কারটি করেন জাপানি বিজ্ঞানী শিমন সাকাগুচি। সে সময় বিজ্ঞানীরা মনে করতেন, শরীরের ইমিউন টলারেন্স বা সহনশীলতা কেবল থাইমাসে তৈরি হয়, যেখানে ক্ষতিকর কোষগুলো নির্মূল হয়ে যায়। একে বলা হয় ‘সেন্ট্রাল টলারেন্স’। কিন্তু সাকাগুচি দেখান, ইমিউন সিস্টেম আরও জটিল। তিনি এমন এক নতুন শ্রেণির কোষের সন্ধান দেন, যারা শরীরকে অটোইমিউন রোগ থেকে রক্ষা করে। এরপর ২০০১ সালে মেরি ব্রাঙ্কো ও ফ্রেড র্যামসডেল আরেকটি যুগান্তকারী আবিষ্কার করেন। তারা দেখেন, একটি বিশেষ জাতের ইঁদুর সহজেই অটোইমিউন রোগে আক্রান্ত হয়, কারণ তাদের ‘এফওএসপিথ্রি’ নামে এক জিনে ত্রুটি রয়েছে। পরে তারা প্রমাণ করেন, মানুষের শরীরেও এই জিনে মিউটেশন হলে গুরুতর অটোইমিউন রোগ ইমিউনোডিসরেগুলেশন পলিএন্ডোক্রিনোপ্যাথি এনটেরোপ্যাথি এক্স-লিংকড সিনড্রোম (আইপিইএক্স) দেখা দেয়। ২০০৩ সালে সাকাগুচি এ দুটি আবিষ্কারকে যুক্ত করেন। তিনি দেখান, এফওএসপিথ্রি জিনই সেই কোষগুলোর বিকাশ নিয়ন্ত্রণ করে, যেগুলো তিনি ১৯৯৫ সালে আবিষ্কার করেছিলেন। এ কোষগুলো এখন পরিচিত ‘রেগুলেটরি টি সেল’ নামে। যারা অন্য ইমিউন কোষগুলোর কর্মকাণ্ড নজরে রাখে এবং নিশ্চিত করে যে শরীর নিজের টিস্যুগুলোর বিরুদ্ধে লড়াই না করে। মেরি ই ব্রাঙ্কো যুক্তরাষ্ট্রের প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টর অব ফিলোসফি (পিএইচডি) ডিগ্রি অর্জন করেছেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সিয়াটলের ইনস্টিটিউট ফর সিস্টেমস বায়োলজির সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার। ফ্রেড র্যামসডেল ১৯৮৭ সালে লস অ্যাঞ্জেলেসের ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া থেকে পিএইচডি অর্জন করেন। তিনি সান ফ্রান্সিসকোভিত্তিক সোনোমা বায়োথেরাপিউটিকসর বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্বরত। শিমন সাকাগুচি ১৯৭৬ সালে এমডি ও ১৯৮৩ সালে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন জাপানের কিয়োটো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। বর্তমানে ওসাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমিউনোলজি ফ্রন্টিয়ার রিসার্চ সেন্টারের ডিস্টিংগুইশড প্রফেসর তিনি।