করোনা মহামারির ২ বছর পর আবারও দিনাজপুরের বিভিন্ন এলাকায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের আয়োজনে চড়ক পূজা ও গ্রামীণ মেলার আয়োজন করা হয়েছে। চড়ক পূজা ও একদিনের এই গ্রামীণ মেলায় ছিল মানুষের উপচে পড়া ভিড়। হাত জোড় করে ভগবানের কাছে মঙ্গল কামনা করেন সবাই।
দিনাজপুর সদরের শেখপুরা ইউপির উত্তর গোপালপুর এলাকার দুর্গা শিব মন্দিরের পাশের মাঠে চিরিরবন্দরের ভিয়াইল ইউপির তালপুকুরসহ কয়েক এলাকায় চড়ক পূজা অনুষ্ঠিত হয়। বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৫টার পর থেকে চড়ক পূজা ও মেলায় সনাতন ধর্মের লোক ছাড়াও কয়েক হাজার মানুষের পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে।
পূজার পাশাপাশি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কালী, শীতলা ও বুড়ি দেবীর পূজা করা হয়। এর মধ্যে কালী পূজা করেন তিনজন ব্রাহ্মণ। একজন ব্রাহ্মণের সহায়ক শীতলা এবং বুড়ি পূজা করেন। একইসঙ্গে যার পিঠ ফুটো করে চড়কে ঘুরানো হয় তার পূজাও করা হয়। এবার শম্ভু রায় নামে এক ব্যক্তির পিঠ ফুটিয়ে চড়কে ঘোরানো হয়।
সম্ভু চন্দ্র রায় জানান, ১৬ বছর ধরে এটি করে আসছি। স্থানীয় মেলা কমিটি এর জন্য ৪/৫ হাজার টাকা সম্মানি দেয়। এ কাজটি করার আগে প্রায় ৮-৯ দিন আগে থেকে মাছ-মাংস বাদ দিয়ে শুধুমাত্র নিরামিষ খাই এবং মাঝে মাঝে উপোস থাকতে হয়। এ কাজে সহযোগিতা করেন আমার ওস্তাদ জোতিন।
গোপালপুর দুর্গা শিব মন্দির পূজা উদযাপন কমিটির নির্বাহী সদস্য মিহির রায় বলেন, চৈত্র সংক্রান্তির দিনে এই মেলা হয়। এর আগে চড়ক পূজা, কালী পূজা, শীতলা পূজা ও মুড়ি মায়ের পূজা করা হয়। অনেক পুরাতন রীতি এটি। পঞ্জিকাতেও এই পূজার বর্ণনা আছে। তাই আমরা এটি উদযাপন করি। গোপালপুর ছাড়াও সদরের বিদ্যাশ্বরী এলাকাতেও চড়ক ঘুরানো ও চড়ক মেলা অনুষ্ঠিত হয়।
তবে মেলায় একটি দুর্ঘটনা ঘটেছে। চিরিরবন্দরের ভিয়াইল ইউপির তালপুকুরে পিঠে হুক আটকিয়ে চরকির মতো ঘুরানোর কিছুক্ষণ পরেই ঘটে দুর্ঘটনা। আলদা হয়ে যায় লোহার হুক ও চামড়া। চামড়ায় লাগানো লোহার হুক থেকে ফুটো করা ছিড়ে যায় চামড়া। প্রায় ২৫-৩০ ফিট উচ্চতা থেকে মাটিতে পরে যায় চড়খিয়াল কালিপদ রায়। সাথে সাথে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়। বর্তমানে তিনি আশঙ্কামুক্ত রয়েছেন বলে জানা যায়।
বিডি প্রতিদিন/এমআই