গাংনী উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক কাউন্সিলে সভাপতি সাহিদুজ্জামান খোকন ও সম্পাদক মকলেছুর রহমান মকুল রাজাকারপুত্র বলে অভিযোগ উঠেছে। তাদেরকে অপসারণ করে আওয়ামী পরিবারের সন্তানদের দিয়ে গাংনী উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি গঠনের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ সোমবার দুপুরে মেহেরপুর রিপোর্টার্স ক্লাব মিলনায়তনে 'রাজকার অনুপ্রবেশকারী ও হাইব্রিড মুক্ত আওয়ামী লীগ গঠন বাস্তবায়ন পরিষদ' এ সংবাদ সম্মেলন করে।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা লিখিত বক্তব্যে বলেন, স্বাধীনতার নেতৃত্বদানকারী দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগে স্বাধীনতার বিপক্ষের শক্তি যুদ্ধাপরাধী, রাজাকার পরিবারের সন্তান অনুপ্রবেশেকারী ছদ্মবেশে ঢুকে পড়েছে। এদের অত্যাচার নির্যাতন ও ষড়যন্ত্রে বঙ্গবন্ধুর প্রকৃত আদর্শ ও স্বাধীনতার মূল্যবোধ ত্যাগী দু:সময়ের নেতাকর্মীরা আজ দলে অবহেলিত। দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনা বার বার নির্দেশনা দিয়েছেন যে আওয়ামী লীগের কোনো গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় রাজাকার অনুপ্রবেশকারি থাকবে না। কিন্তু মেহরপুর গাংনী উপজেলার সভাপতি শহিদুজ্জামান খোকন এমপি চিহ্নিত গণি রাজাকারের পুত্র ও সাধারণ সম্পাদক মকলেচুর রহমান মকুল অপর চিহ্নিত কুখ্যাত রাজাকার আব্দুল মান্নানের পুত্র। আমরা এই দুইজনেরই অপসারণ চাই।
সাংবাদ সম্মেলনে আরো বলা হয়, গত ১০ এপ্রিল গাংনী উপজেলা সম্মেলনে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজ্জাম্মেল হক উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণার পর দলের অন্য নেতারা হাউজ থেকে ওয়াক আউট করে এর প্রতিবাদ করে। তারপরও বিএম মোজ্জাম্মেল সম্পূর্ণ পক্ষাপাতিত্ব মূলক ভাবে দুই রাজাকারের পুত্রকে দলের দায়িত্ব দিয়েছেন। তিনি এর দায় এড়াতে পারে না। আমরা দলের এই দায়িত্বশীল ব্যক্তির পক্ষাপাতিত্ব মূলক আচারণের তদন্ত চাই। এই দুই রাজাকার পুত্রের অপসারণের ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য বাংলাদেশ আওয়মী লীগের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ‘রাজাকার অনুপ্রবেশকারী ও হাব্রিড মুক্ত আওয়ামী লীগ গঠন বাস্তবায়ন পরিষদ’র সদস্য সচিব ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ সভাপতি মো: ইসমাইল হোসেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন রাজাকার অনুপ্রবেশকারী ও হাব্রিড মুক্ত আওয়ামী লীগ গঠন বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল লতিফ, মেহেরপুর কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক ওয়াসিম সাজ্জাদ লিখন, গাংনী উপজেলা যুবলীগের মোশারফ হোসেন প্রমুখ।
এদিকে সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগের বিষয়ে গাংনী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এমপি সাহিদুজ্জামান খোকন বলেন, আমি ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি, ১৮ বছর গাংনী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। আমার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে মুগ্ধ হয়েই প্রধানমন্ত্রী আমাকে নৌকা প্রতীক দেন। আমি প্রধানমন্ত্রীকে গাংনী আসন উপহার দিয়েছি। গত ১০ এপ্রিল উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে শতভাগ কাউন্সিলরদের সমর্থনে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছি। মাদকাসক্ত, সুযোগ সন্ধানীরা দুর্নীতি করার সুযোগ না পাওয়াতে আমার নামে অপপ্রচার করছেন।
তিনি আরও বলেন, সংবাদ সম্মেলন করা লিখনের দাদা সামসুল হক স্বাধীনতা বিরোধী মুসলিম লীগের লোক ছিলেন। নিকটাত্মীয়রা জামায়াতের রাজনীতির সাথে জড়িত। ইসমাইল হোসেন কয়েকবার মাদকসহ পুলিশের হাতে ধরা পড়েছে। গত উপজেলা নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে ওয়াসিম সাজ্জাদ লিখন মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে মজিরুল ইসলাম কাপপিরিচ প্রতীক এবং ইসমাইল হোসেন আনারস প্রতীক নিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করেছেন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী নৌকার বিরুদ্ধে প্রার্থী হলে দলের কোন পদে থাকতে পারবে না। সেই হিসেবে সংবাদ সম্মেলন করা ওরা আওয়ামী লীগ কিংবা অঙ্গসংগঠনের কোনো সদস্য না।
এদিকে সাধারণ সম্পাদক মকলেছুর রহমান মুকুলের মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল