ঢাকা থেকে বরিশালগামী লঞ্চে অজ্ঞান পার্টির খপ্পড়ে পড়া এক প্রকৌশলীকে হাসপাতালে না পাঠিয়ে তাকে লঞ্চে নিয়ে ঢাকা এবং ঢাকা থেকে ফের তাকে নিয়ে বরিশাল নদী বন্দর পর্যন্ত চলাচলের অভিযোগ উঠেছে একটি যাত্রীবাহি লঞ্চের বিরুদ্ধে। টানা দুইদিন পরিবারের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন থাকায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে তার স্বজনরা। দুইদিন পর গত শনিবার দিবাগত গভীর রাতে বরিশাল নদী বন্দরে নোঙ্গর করা ওই লঞ্চ থেকে অচেতন অবস্থায় ওই প্রকৌশলীকে শের-ই বাংলা মেডিকেলে ভর্তি করেন সিটি মেয়র ও তার সহযোগীরা। এ ঘটনায় যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছেন বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যান।
হতভাগা ওই ব্যক্তির নাম প্রকৌশলী আল-আমিন। তিনি পটুয়াখালীর গলাচিপার ফুলখালী গ্রামের মো. আব্দুল বারীর ছেলে এবং ময়মনসিংহ জেলার ভালুকায় একটি প্রতিষ্ঠানের একজন কর্মকর্তা।
স্বজনরা জানায়, গত শুক্রবার রাতে ঢাকা থেকে বরিশালগামী এমভি মানামী লঞ্চে বরিশালের উদ্দেশ্যে আসছিলেন প্রকৌশলী আলামিন। পথিমধ্যে সে অজ্ঞান পার্টির খপ্পড়ে পড়ে। তার সাথে থাকা মুঠোফোনসহ অন্যান্য মূল্যবান মালামাল লুটে নেয় দুস্কৃতিকারীরা। এ কারণে পরিবার থেকে পুরোপুরি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকে সে। শুক্রবার দিবাগত মধ্য রাতে লঞ্চটি বরিশাল নদী বন্দরে যাত্রী নামিয়ে ফের ঈদে ঘরমুখো যাত্রী আনতে ঢাকার উদ্দেশ্যে ফিরে যায়। এর আগে অচেতন ওই যাত্রীকে বরিশালের কোনো হাসপাতালে ভর্তি না করিয়ে লঞ্চের এক কর্নারে অচেতন অবস্থায় ফেলে রাখে তারা। শনিবার সন্ধ্যায় ফের ওই লঞ্চটি ঢাকা থেকে যাত্রী নিয়ে বরিশালের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাসে। তার আগে লঞ্চের কর্মচারীরারা অচেতন ওই ব্যক্তিকে ঢাকার হাসপাতালে ভর্তি করেননি, এমনকি পুলিশ প্রশাসনকেও জানাননি। পরিবারের লোকজন বিভিন্নভাবে খবর নিয়ে মানামী লঞ্চে এক অচেতন ব্যক্তি পড়ে থাকার খবর পান। রবিবার দিবাগত রাত সোয়া ২টায় মানামী লঞ্চটি বরিশাল নদী বন্দরে পৌঁছার পর তাকে উদ্ধার করে শের-ই বাংলা মেডিকেলে প্রেরণ করেন সিটি মেয়র ও তার সহযোগীরা।
স্বজনদের অভিযোগ, লঞ্চ কর্তৃপক্ষ দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছে। তারা একজন মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি করেছে। তারা এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং বিচার দাবি করেন।
শের-ই বাংলা মেডিকেলের মেডিসিন বিভাগের সহকারী রেজিস্ট্রার ডা. শামসুদ্দোহা তৌহিদ জানান, তিনি আননোন পয়জনিংয়ে আক্রান্ত। দুইদিন ধরে অচেতন থাকার পরও একজন ব্যক্তির জ্ঞান ফিরে পাওয়া সত্যি সৌভাগ্যের। তার যথাযথ চিকিৎসা চলছে বলে জানিয়েছেন তিনি। চিকিৎসায় সে দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবে বলেও আশা করেন তিনি।
তবে এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে দাবি করেছেন লঞ্চের কাস্টমার ম্যানেজার রিজওয়ান হোসেন রিপন। রবিবার মধ্য রাতে মেয়রের লোকজন লঞ্চ থেকে ধারাধরি করে একজন অসুস্থ ব্যক্তিকে হাসপাতালে পাঠিয়েছে বলে তিনি জানান।
এদিকে এ ঘটনা তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছেন বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যান কমডোর গোলাম সাদেক।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল