১৯ মে, ২০২২ ১২:৪৯
পঞ্চগড়ে কালোবাজারে চা বিক্রি ঠেকাতে প্রশাসনিক উদ্যোগ

কাঁচা চা পাতার মূল্য ১৮ টাকা কেজি

পঞ্চগড় প্রতিনিধি

কাঁচা চা পাতার মূল্য ১৮ টাকা কেজি

কাঁচা চা পাতা মূল্য নির্ধারণ কমিটির জরুরি সভা

পঞ্চগড়ে কাঁচা চা পাতার বিক্রি মূল্য ১৮ টাকা কেজি নির্ধারণ করা হয়েছে। সেই সাথে কারখানা থেকে অবৈধভাবে কালো বাজারে চা বিক্রি ঠেকাতে টাস্কফোর্সসহ বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

জানা যায়, চট্টগ্রাম অকশন মার্কেট থেকে তৈরি চা পাতা সংগ্রহ করে প্যাকেটজাত করে বাজারে বিক্রির কথা থাকলেও পঞ্চগড়ের চা কারখানাগুলোর একটি সিন্ডিকেট এবং স্থানীয় চা ব্যবসায়ীরা অবৈধভাবে প্যাকেটজাত চা বাজারে বিক্রি করছে। জেলার ২০টি কারখানার মধ্যে ২টি কারখানার স্থানীয় বাজারে ২৫ শতাংশ চা বিক্রির অনুমোদন রয়েছে। কিন্তু প্রায় প্রত্যেক কারখানা থেকেই রাতের অন্ধকারে তৈরি চা পাতা বিক্রি হচ্ছে। এতে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে।

কারখানাগুলো থেকে অস্বাস্থ্যকর এবং নিম্নমানের চা বিক্রি করছে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছে। এসব নিম্নমানের চায়ে বাজার সয়লাব হয়েছে। এদিকে অন্তত ২ শতাধিক চা কোম্পানি গড়ে উঠেছে। এসব প্যাকেটজাত চা কোম্পানির মধ্যে দু’একটির অনুমোদন থাকলেও বাকিদের কোনো অনুমোদন নাই।

চা বোর্ড সূত্র বলছে, প্যাকেট জাত চা বিক্রির জন্য চা বোর্ড থেকে তিনটি ছারপত্র প্রয়োজন। এসব কোম্পানির সব ছাড়পত্র নেই। অবৈধভাবে কালোবাজারে চা বিক্রি ঠেকাতে তাই প্রশাসনিক উদ্যোগ গ্রহণ করছে জেলাপ্রশাসন।

এদিকে, হঠাৎ করেই কারখানা মালিকরা ক্ষুদ্র চা চাষিদের উৎপাদিত কাঁচা চা পাতার মূল্য কমিয়ে দিয়েছিল। কারখানার মালিকদের অভিযোগ নিলাম বাজারে চায়ের দরপতন, গুণগত মান সম্পন্ন চা পাতা সরবরাহ করতে না পারায় ক্ষতির মুখে পড়ছিলেন তারা।

অন্যদিকে, ক্ষুদ্র চা চাষিরা জানান, ১ কেজি কাঁচা চা পাতা উৎপাদন করতে ১৬ দশমিক ৭১ টাকা খরচ হয়। কারখানা মালিকরা ১২ থেকে ১৪ টাকায় চা পাতা কেনায় লোকশানে পড়েছিলেন তারা। এ মাসের শুরু থেকে কাঁচা চা পাতার মূল্য বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলন করে আসছিলেন চা চাষিরা। চাষিদের এমন দাবির পরিপ্রেক্ষিতে কাঁচা চা পাতার মূল্য ১৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

বুধবার সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে কাঁচা চা পাতার মূল্য নির্ধারণ কমিটির জরুরি সভায় এসব সিদ্ধান্ত হয়। এই কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম কাঁচা চা পাতার মূল্য নির্ধারণ ও কালোবাজারে তৈরি চা বিক্রি বন্ধের জন্য প্রশাসনিক উদ্যোগের ঘোষণা দেন। টানা ৫ ঘণ্টার এই বৈঠকে ক্ষুদ্র চা চাষি, বাগান মালিক, কারখানা মালিক, প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, রাজনীতিবিদসহ গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

সভায় পঞ্চগড় পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইউসুফ আলী, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট শ্রীমতি জয়শ্রী রানী, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাসুদুল হক, বাংলাদেশ চা বোর্ডের আঞ্চলিক শাখার ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. শামিম আল মামুন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান শেখ মিলন উপস্থিত ছিলেন। সভার শুরুতে পঞ্চগড়ে চা বিষয়ে একটি প্রতিবেদন তুলে ধরেন ড. শামিম আল মামুন।

সভা শেষে জেলা প্রশাসক দুই পক্ষকে আজকের সভার সিদ্ধান্ত মানতে নির্দেশ দেন, তা না হলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে কারখানা মালিকদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানিয়ে দেন তিনি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর