রংপুরে পীরগাছা উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামে মেয়েকে কুপিয়ে হত্যার পর বাবা রশিদুল ইসলামের (২৯) আত্মহত্যা চেষ্টার ঘটনায় মামলা হয়েছে। সোমবার সকালে পীরগাছা থানায় শ্বশুর জাহাঙ্গীর আলম বাদি হয়ে জামাই রশিদুলকে আসামা করে মামলা দায়ের করেছেন। এছাড়া রশিদুল, স্ত্রী জেসমিন ও মেয়ে সুমাইয়া রমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধিন রয়েছে।
এর মধ্যে স্ত্রী জেসমিনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এদিকে সকালে নিহত কন্যা রফিয়া আক্তারের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে বেশ কিছুদিন থেকে রশিদুল মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিল। এছাড়া স্ত্রীর সাথে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ ছিল। তবে কি কারণে এ ধরণের হত্যাকান্ড ঘটেছে এর প্রকৃত কারণ তদন্ত শেষে জানা যাবে বলে জানিয়েছেন রংপুর জেলা পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল-সি) আশরাফুজ্জামান পলাশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০০৮ সালে পীরগাছা উপজেলার কৈকুড়ি ইউনিয়নের মোংলাকুটি গ্রামের বাসিন্দা কৃষক রশিদুল ইসলামের সাথে বিয়ে হয় জেসমিন আক্তারের (২৭)। বিয়ের পর তাদের সংসারে রাফিয়া (১১) ও সুমাইয়ার (৩) জন্ম হয়। পালক পিতা মৃত সিদ্দিক হোসনের কাছে মানুষ হওয়া রশিদুল গত ১৫ দিন থেকে মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন। রবিবার রাতে নিজ বাড়িতে রশিদুলের সাথে তার স্ত্রীর কথা কাটাকাটি হলে ৫ মাসের অন্তঃস্বত্তা স্ত্রী জেসমিন আক্তার, বড় মেয়ে রাফিয়া, ছোট মেয়ে সুমাইয়া ও দাদী ফাতেমা বেগমকে ধারালো দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা চালায়।
এতে ঘটনাস্থলেই রাফিয়া মারা যায়। এ সময় রশিদুল তার নিজের গলায় আঘাত করে রক্তাক্ত করাসহ বিষ পান করে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়। বাড়িতে চিৎকারের শব্দ শুনে প্রতিবেশিরা এগিয়ে এসে আহতদের উদ্ধার করে পীরগাছা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। বর্তমানে রশিদুল, তার স্ত্রী জেসমিন ও ছোট মেয়ে সুমাইয়া রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও রশিদুলের দাদী ফাতেমা বেগম পীরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধিন রয়েছেন।
রংপুর জেলা পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল-সি) আশরাফুজ্জামান পলাশ বলেন, নিহত রাফিয়ার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রমেক মর্গে পাঠানো হয়েছে। তিনি হাসপাতালের চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে জানান, রশিদুলের রাতেই অপারেশন করা হয়েছে। স্ত্রী জেসমিন ৫ মাসের অন্তঃস্বত্তা। তিনি এখনও বিপদমুক্ত নন। পুলিশ কর্মকর্তা আরও বলেন, মানসিক ভারসাম্যহীনতা কিংবা জমি-জমার কারণে এ হত্যাকান্ড চালিয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনায় রশিদুলকে আসামী করে তার শ্বশুর একটি মামলা দায়ের করেছেন।
বিডি প্রতিদিন/এএ