জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মহাসড়কের (ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে) ভাঙ্গা উপজেলার বগাইল টোল প্লাজায় টোল আদায়ে ধীর গতির কারণে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। টোল আদায় শুরুর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই দীর্ঘ ৪ কিলোমিটারের বেশি জায়গা জুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়।
শুক্রবার রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে টোল আদায় শুরু হয়। সকাল ৭টার দিকেই দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। এ যানজট প্রায় সাড়ে ১১টা পর্যন্ত লেগে থাকে। পরবর্তীতে বুথ কাউন্টার বেশি চালু করার ফলে দুপুরের পরে সড়কে অনেকটা স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরে আসে। সকাল সাড়ে ৭টার দিকে গিয়ে দীর্ঘ যানজট দেখা যায়। এ সময় টোল প্লাজার দায়িত্বপ্রাপ্ত এক কর্মকর্তা বলেন, এখানে ১২টা টোল বুথের মধ্যে আমরা ৪টি চালু করতে পেরেছি। বাকিগুলো চালু করার চেষ্টা চলছে। দুপুর ১২টা নাগাদ ৭টা টোল বুথ চালু হতে দেখা যায়। বিকাল ৩টার মধ্যে ৮টি টোলবুথ চালু হয়।
শুক্রবার(১ জুলাই) সকাল ৭টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত বিভিন্ন পরিবহনের যাত্রী চালকদের যানজটের কারণে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায়। মাদারীপুর থেকে ঢাকাগামী চন্দ্রা পরিবহনের একটি বাসে সুপারভাইজার জাকির হোসেন বলেন, এতক্ষণ আমাদের গাড়ি পদ্মা সেতু পার হয়ে যাওয়ার কথা। সেখানে ভাঙ্গার বগাইল টোলপ্লাজায় আটকে আছি প্রায় ৪০ মিনিট।
ব্যক্তিগত গাড়িতে ঢাকা থেকে নড়াইলগামী ব্যবসায়ী সাজ্জাত হোসেন (৪০) বলেন, আমরা ১ ঘণ্টারও বেশি সময় এখানে দাঁড়ানো। ঈদের সময় আরও জট বাঁধবে।
বগাইল টোল প্লাজার ডেপুটি ম্যানেজার দেলোয়ার হোসেন সকাল ১০টার দিকে বলেন, মোট টোল বুথ ১২টি। আমরা মোট ৪টি চালু করেছি। বাকিগুলো চালু করার চেষ্টা চলছে। চালু হলেই সমস্যার সমাধান হবে।
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা থেকে ভাঙ্গাগামী ৫৫ কিলোমিটার এই এক্সপ্রেসওয়ের নাম দেওয়া হয়েছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এক্সপ্রেসওয়ে। পদ্মাসেতু পার হয়ে শরীয়তপুরের জাজিয়া এলাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ২৩ কিলোমিটার এই মহাসড়ক ব্যবহার করলে একটি বড় বাসকে দিতে হবে ২০০ টাকা, মিনিবাস ১১০ টাকা, মাইক্রোবাস ৯০ টাকা, প্রাইভেটকার ৫৫ টাকা, মোটরবাইক ১০ টাকা। এছাড়া ট্রাকের ক্ষেত্রে ট্রেইলর ট্রাকের (সবচেয়ে বড় ট্রাক) টোল ধরা হয়েছে ৬৭৫ টাকা, ভারী ট্রাকের ক্ষেত্রে ৪৪০ টাকা এবং মাঝারী আকারের ট্রাকের ক্ষেত্রে ২২০ টাকা দিতে হবে।
ঢাকার সায়েদাবাদ থেকে ফরিদপুরগামী গোল্ডেন লাইন পরিবহনের বাসচালক মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ১০৫ মিনিটে সায়েদাবাদ থেকে এই বগাইল টোল প্লাজায় এসেছি। এখানে এসে প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে লাইনে আছি। এখনও সামনে দুই-তিন শত যানবাহনের সারি। তিনি বলেন, পদ্মসেতু ও এই এক্সপ্রেসওয়ের টোল সমন্বয় করে এক জায়গায় নেওয়া হলে আমাদের এই ভোগান্তি পোহাতে হত না।
টোলপ্লাজার ভারপ্রাপ্ত প্রশাসনিক কর্মকর্তা আবু হোসেন জাকারিয়া দুপুর আড়াইটার দিকে বলেন, সময়ের সাথে আমরা আরও বেশি বুথ চালু করেছি। আজ প্রথম দিনে ব্যক্তিগত গাড়ির প্রচুর ভিড় থাকায় ও সকালের দিকে বুথ কম চালু হওয়ায় যান জটের সৃষ্টি হয়েছিল। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল