‘মারবো না, মরবো না। থাকবো মোড়া মিলে মিশে’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে নরসিংদীর চরাঞ্চলে টেঁটাযুদ্ধ বন্ধে বহু মানুষকে একসঙ্গে শপথবাক্য পাঠ করানো হয়েছে। টেঁটাযুদ্ধ, খুনোখুনি, মারামারিসহ সকল প্রকার দাঙ্গা থেকে নিজেদের বিরত রাখতে এই শপথ অনুষ্ঠানে চরাঞ্চলের সকল চেয়ারম্যানও ছিলেন। আধিপত্য বিস্তারসহ সকল বিবেধ ভুলে মিলেমিশে থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করানো হয়েছে তাদের।
বিবধমান গ্রুপপগুলোর চলমান বিরোধ নিরসনে এলাকাবাসীকে নিয়ে এক মতবিনিময় সভায় এই শপথ পড়ানো হয়। করিমপুর ইউনিয়নের রসুলপুর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে নরসিংদী জেলা পুলিশ। এছাড়া মাদকসেবীর কাছে সব ধরনের পণ্য বিক্রি বন্ধসহ ঘাট থেকে মাদকসেবীদের পারাপারেও অনাগ্রহের ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত পোষণ করা হয়।
সম্প্রতি নরসিংদীর রায়পুরার নিলক্ষা, বাশঁগাড়ী ও আলোকবালী ইউনিয়নে গ্রামবাসীর মধ্যে একাধিক টেঁটাযুদ্ধে বেশ কয়েকজন নিহতসহ প্রায় দুই শতাধিক লোক আহত হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে চরাঞ্চলে টেঁটাযুদ্ধ বন্ধে নরসিংদী জেলা পুলিশ এই উদ্যোগ গ্রহণ করে।
করিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মমিনুর রহমান আপেলের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নরসিংদীর পুলিশ সুপার কাজী আশরাফুল আজিম। সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নরসিংদী সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর মোহাম্মদ আলী, সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর গোলাম মোস্তাফা মিয়া, জেলা কমিউনিটি পুলিশিং কমিটির সভাপতি ও ইন্ডিপেন্ডন্ট কলেজের অধ্যক্ষ ড. মশিউর রহমান মৃধা, নরসিংদী প্রেসক্লাবের সভাপতি হাবিবুর রহমান, নরসিংদী প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ন শাহ্। এ সময় জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, মেম্বারসহ সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় বক্তারা বলেন, একসময় টেঁটা দিয়ে মাছ শিকার করা হতো। এখন এই চরাঞ্চলগুলোতে তা দিয়ে মানুষ হত্যা করা হয়। এটা বর্বরতা ছাড়া আর কিছুই নয়। তাই মনের কালিমা দূর করে টেঁটাযুদ্ধ বন্ধসহ গ্রামের সকল ধরনের বিরোধের অবসান ঘটিয়ে সকলে মিলেমিশে থাকতে হবে।
মতবিনিময় সভায় করিমপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন শ্রেণির হাজারো মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ