মুজিববর্ষ ও বাংলাদেশের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় স্পোর্টস চ্যাম্পিয়নশিপ এর তৃতীয় আসর আয়োজিত হতে চলেছে। এবারের আসরের প্রতিপাদ্য ‘বঙ্গবন্ধুর সোনার দেশ, তারুণ্যের বাংলাদেশ’।
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে সারাদেশের পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মিলিত অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এবারের আসর। এ উপলক্ষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন এবং প্রতিযোগিতার মশাল প্রজ্বলন অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয় আজ।
আজ সোমবার সকালে শোকাবহ আগস্ট স্মরণে বঙ্গবন্ধু আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় স্পোর্টস চ্যাম্পিয়নশিপের পক্ষ থেকে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে দেশবরেণ্য শিক্ষাবিদ ও বিভিন্ন প্রথিতযশা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যবৃন্দকে সঙ্গে নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন বঙ্গবন্ধু আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় স্পোর্টস চ্যাম্পিয়নশিপের সাংগঠনিক কমিটির চেয়ারম্যান, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল।
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে দেশের ৪০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন, গোপালগঞ্জ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, গোপালগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার ও জেলা প্রশাসক, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ এবং বিকেএসপির প্রতিনিধিরা, পৃষ্ঠপোষক, সংশ্লিষ্ট ফেডারেশন ও পরিচালনাকারীদের প্রতিনিধি উপস্থিতি ছিলেন।
বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মেজবাহ উদ্দিনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল বলেন, ‘যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে বঙ্গবন্ধু আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় স্পোর্টস চ্যাম্পিয়নশিপের তৃতীয় আসর উপলক্ষে জাতির পিতার সমাধি সৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন ও প্রতিযোগিতার মশাল প্রজ্বলন করতে পেরে আমরা আবেগাপ্লুত, অভিভূত। আমরা জাতির পিতার স্মৃতিবিজড়িত বাঙালির তীর্থ ভূমি টুঙ্গিপাড়াকে বেছে নিয়েছি। কারণ, আমরা আমাদের তরুণ প্রজন্মের মন ও মননের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও দর্শনকে প্রোথিত করার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ আধুনিক বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে চাই।’
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘টুঙ্গিপাড়া শুধু কোনো স্থান বিশেষ নয়, এটি বাঙালির আবেগ অনুভূতির নাম। এটি বাঙালির অস্তিত্বের সাথে মিশে আছে। এটি বাঙালির তীর্থ ভূমি। এখানেই জন্মগ্রহণ করেছিলেন বাংলা ও বাঙালির সেই পরম আরাধ্য পুরুষ। যার মাধ্যমে বাঙালি পৃথিবীতে প্রথম তার রাষ্ট্র পেয়েছে, আত্মপরিচয় পেয়েছে। টুঙ্গিপাড়ার এই পবিত্র ভূমিতেই ঘুমিয়ে আছেন বাঙালির মুক্তির দিশারি আমাদের মহান নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।’
তিনি বলেন, ‘যতবার আমরা এই পবিত্র ভূমিতে আসি ততবারই হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়। মনে পড়ে যায়, যে মানুষটি তার সারাটি জীবন উৎসর্গ করলো বাঙালির মুখে হাসি ফোটানোর জন্য সেই মানুষটিকে কতিপয় দুর্বৃত্ত কী নির্মমভাবে সপরিবারে হত্যা করলো। তবে তিনি মিশে আছেন আমাদের অন্তরাত্মা ও অনুভূতিতে। তিনি বেঁচে আছেন বাংলার মানুষের হৃদয়ে মৃত্যুঞ্জয়ী হয়ে। তিনি আমাদের চিরন্তন প্রেরণার নিরন্তর উৎস। আমি জাতির পিতাসহ ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্ট নির্মমভাবে নিহত সকল শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এ বছরের সেপ্টেম্বর-আক্টোবরে কলেজ পর্যায় আন্তঃকলেজ বঙ্গবন্ধু ফুটবল টুর্নামেন্ট শুরু হবে। আগামী বছর থেকে আন্তঃকলেজ বঙ্গমাতা ফুটবল টুর্নামেন্ট শুরু করা হবে।’
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব ও সাংগঠনিক কমিটির সদস্য সচিব মেজবাহ উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে সাংগঠনিক কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান নাহিম রাজ্জাক এমপি, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. গোলাম সাব্বির, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. লুৎফুল হাসান, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শহীদুর রশীদ ভূঁইয়া, ঢাকা ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড.হাবিবুর রহমান, বরিশাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ছাদেকুল আরেফিন, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আনোয়ার হোসেন, গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব আলী খান, উপজেলা চেয়ারম্যান সোলায়মান বিশ্বাস প্রমুখ বক্তব্য দেন।
পরে প্রধান অতিথি যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী দ্রুততম মানবী শিরীন আক্তারের হাতে মশাল তুলে দেন। এরপর বিভিন্ন ইভেন্টের ফিক্সচারের ড্র অনুষ্ঠিত হয়।
এর আগে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়ে দোয়া ও মোনাজাতে অংশ নেন প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল। এ সময় দেশের অন্তত ৪০ পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য উপস্থিত ছিলেন।
আগামী সেপ্টেম্বরে এ চ্যাম্পিয়নশিপে ফুটবল, ক্রিকেট, সাইক্লিং, অ্যাথেলেটিক্স, সাঁতার, দাবা, কাবাডিসহ ১২টি ইভেন্টে ৭২০টি পদকের জন্য দেশের ১২৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭ হাজারেও বেশি নারী ও পুরুষ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ