কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় পুলিশ-বিএনপি ও আওয়ামী লীগের মধ্যে ত্রিমুখী সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশ বাদি হয়ে মামলা দায়ের করেছে। মামলায় উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক এডভোকেট জালাল উদ্দিনকে প্রধান আসামি করে ১৩৮ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ১৫০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
শনিবার (৩ সেপ্টেম্বর) রাতে পাকুন্দিয়া থানার সাব-ইন্সপেক্টর (এসআই) শাহ কামাল বাদি হয়ে সন্ত্রাস বিরোধী আইনে মামলাটি দায়েরে করেন। মামলায় ইতোমধ্যে ২৩ জনকে আটক করেছে পুলিশ। কিশোরগঞ্জ সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আল আমিন হোসাইন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, শনিবার বিএনপির সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিলের অনুমতি ছিল না। এ অবস্থায় সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে সৈয়দগাঁও চৌরাস্তা থেকে মিছিল নিয়ে তারা পৌর বাজারের দিকে আসতে চাইলে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। প্রায় সাড়ে পাঁচ ঘণ্টাব্যাপী চলা সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ শতাধিক রাবার বুলেট ও টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করে। সংঘর্ষে ১১ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়।
পাকুন্দিয়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক এডভোকেট জাজাল উদ্দিন জানান, পুলিশ বিনা কারণে আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালিয়েছে। এছাড়াও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও পুলিশের সাথে যুক্ত হয়ে আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। এ ঘটনায় আমাদের দলের দেড়শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। পুলিশের গুলিতে আমাদের দুইজন কর্মী গুরুতর আহত হয়েছেন বলে দাবি করেন তিনি। তাদের একজন ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালের আইসিউইতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলেও জানান তিনি।
পাকুন্দিয়া পৌর সভার মেয়র আওয়ামী লীগ নেতা মো. নজরুল ইসলাম আকন্দ ও নারান্দী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা মো. শফিকুল ইসলাম (ভিপি শফিক) জানান, বিএনপির আগুন সন্ত্রাসকে প্রতিরোধ করতে গিয়ে আমাদের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
পাকুন্দিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক মো. আলমগীর হোসেন জানান, হাসপাতাল থেকে ১১ জন পুলিশ সদস্য চিকিৎসা নিয়েছেন। পুলিশ ছাড়াও বেশ কয়েকজন চিকিৎসা নিয়েছেন। তাদের মধ্যে দুইজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়।
উল্লেখ্য, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে শনিবার (৩ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টার দিকে পাকুন্দিয়া উপজেলা বিএনপির পক্ষ থেকে সৈয়দগাঁও চৌরাস্তা থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে পৌর বাজারের দিকে আসতে চাইলে সংঘর্ষ শুরু হয়। পরে ওই সংঘর্ষ বিএনপি, পুলিশ ও আওয়ামী লীগের মধ্যে ত্রিমুখী সংঘর্ষে পরিণত হলে পৌর বাজার রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। সংঘর্ষে তিন পক্ষের প্রায় দেড় শতাধিক লোক আহত হন।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ