ইউনিয়ন নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জের ধরে মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার নহাটা ইউনিয়নের পানিঘাটায় নৌকার সমর্থকরা অন্তত ১০টি বাড়িতে ভাঙচুর চালিয়েছে। এছাড়া এ ঘটনা নিয়ে উভয় পক্ষের সংঘর্ষে কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়েছে। বেশ কয়েকজনকে মাগুরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। মামলা পাল্টা মামলায় ২৩ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
অন্যদিকে ভাঙচুর হামলা ও গ্রেফতারের ভয়ে চাকুলিয়া, বেজড়া, নহাটা, নারান্দিয়া পানিঘাটাসহ কয়েকটি গ্রামের শাতাধিক পুরুষ গ্রাম ছেড়েছে। গোটা গ্রামগুলোতে এখন চলছে আতংক।
ইকরাম হোসেন অভিযোগ করেন, গত ইউপি নির্বাচনে নহাটা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন আলী মিয়া। অন্যদিকে বিদ্রোহী প্রার্থী হন তোরাপ হোসেন। নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী তোরাপ হোসেন জয়ী হন। এই নির্বাচনী বিরোধকে কেন্দ্র করে গত ১ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার নৌকার সমর্থকরা ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে তোরাপ হোসেনের সর্মথক আফসার উদ্দিন মোল্যা, আলীবর মোল্যা, নেছার মোল্যা, ইকরাম হোসেন, রতন মোল্যাসহ অনেকের বাড়িতে ভাংচুরের ঘটনা ঘটায়।
নহাটা গ্রামের আলীবর রহমানের স্ত্রী সাথী পারভিনসহ বাড়ির অন্য মহিলারা জানান, আমরা আওয়ামী লীগ করি। সাবেক চেয়ারম্যান বর্তমানে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা কামাল লিটন বিএনপি’র লোকদের নিয়ে সামাজিক দল গঠন করে আমাদের সেই মিটিংয়ে যাওয়ার কথা বলে। মিটিংয়ে আমাদের পরিবারের কেউ না যাওয়ায় বাড়িতে হামলা ও ভাংচুর চালানো হয়।
পানিঘাটা গ্রামের আফসার উদ্দিনের স্ত্রী শিখা বেগম বলেন, ‘আমরা তো লিটনের আব্বা আয়ুব হোসেনের সাথে আওয়ামী লীগ করেছি। গত নির্বাচনেতো লিটনের কথা মতোই তোরাপের ঘোড়া মার্কায় ভোট দিছি। এখন লিটন আলী মিয়ার সাথে মিশে গিয়ে তাদের লোকজন দিয়ে আমাদের বাড়িঘর ভাংচুর করছে। উল্টো মামলা দেওয়ায় বাড়িতে পুরুষ মানুষ নেই।’
নহাটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তোরাপ হোসেন জানান, অনেক আগে থেকেই লিটন ভাই ও আলী ভাইয়ের মধ্যে রাজনৈতিক বিরোধ চলে আসছিল। দু’জনেই এই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান। অল্প কিছুদিন আগে তারা একত্রিত হয়ে আমার সমর্থকদের উপর হামলা, ভাংচুর ও মামলা করছে। আমি চাই ইউনিয়নের প্রতিটি মানুষ শান্তিতে থাক।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা কামাল লিটন বলেন, বিছিন্ন ঘটনাকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। যা পরবর্তীতে গোটা ইউনিয়নে ছড়িয়ে পড়ে। এর সাথে আমার কোন সংশ্লিষ্টতা নেই।
নহাটা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ক্যাম্প ইনচার্জ আবুল কাশেম বলেন, গত ১ সেপ্টেম্বর সামাজিক বিরোধের জের ধরে নহাটা ইউনিয়নের দুই দল গ্রামবাসী মারামারিতে লিপ্ত হয়। এ সময় পুলিশ দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে আহতদেরকে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে। এ সময় বেশ কয়েকটি বাড়ি ঘরে হামলা ও ভাংচুর হয়েছে। একটি মোটরসাইকেল ও গাড়ি ভাংচুর হয়েছে। এলাকায় শৃঙ্খলা বৃদ্ধিতে পুলিশী তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল