নওগাঁর আত্রাইয়ে একটি সাঁকোর অভাবে যুগ যুগ থেকে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে দুই পাড়ের শিক্ষার্থীসহ হাজারো মানুষ। এলাকার উৎপাদিত ফসল বাজারজাতকরণ নিয়ে একদিকে কৃষকরা যেমন বিড়ম্বনায় পড়ছেন, অন্যদিকে শিক্ষার্থী এবং সাধারণ পথচারীরাও পড়েছেন বিপাকে।
জানা গেছে, আত্রাই উপজেলার ভোঁপাড়া ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী একটি গ্রামের নাম জামগ্রাম। এ গ্রামের পশ্চিম দিক দিয়ে বয়ে গেছে একটি ছোট্ট খাল। যে খালে সারাটা বছর জুড়ে বর্ষা ও শুষ্ক মৌসুমেও পানি থাকে। সাম্প্রতিক সময়ে খালটি পুনঃখনন করায় তা অনেক গভীর হয়েছে। এ খালের পূর্বপাশে শত শত পরিবারের বসবাস যা ঐতিহ্যবাহী জামগ্রাম গ্রাম। খালের পশ্চিম দিকে রয়েছে বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ।
গ্রামের শত শত কৃষক এ মাঠেই বোরো ও আমন ধানসহ বিভিন্ন ফসল চাষ করে থাকেন। গ্রাম ও মাঠের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত খালের উপর কোন সেতু না থাকায় মাঠের ফসল ঘরে তুলতে তাদের দ্বিগুণ অর্থ ব্যয় হয়। এদিকে, মাঠ ছাড়াও ওই খালের পশ্চিমে রয়েছে গ্রামবাসীর কবরস্থান। যেখানে লাশ বহনে তাদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। অন্যদিকে, ওই গ্রামে প্রতিবছর অনুষ্ঠিত হয় ঐতিহাসিক সীতাতলার মেলা। যে মেলাকে কেন্দ্র করে হাজার হাজার লোক সেখানে সমবেত হন।
তিন থেকে সাত দিন পর্যন্ত সেখানে বসে রকমারি জিনিষপত্রের দোকান। মেলাকে কেন্দ্র করে খালের পূর্ব ও পশ্চিম পাশে হাজার হাজার লোকের পদচারণায় এলাকা মুখরিত হয়ে উঠে। কিন্তু খালের উপর কোন সেতু না থাকায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নড়বড়ে বাঁশের সাঁকো দিয়েই পারাপার হতে হয় গ্রামবাসীর। আত্রাই উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় উন্নয়নের ছোঁয়া লাগলেও একটি সাকোর অভাবে জাম গ্রামবাসীর স্বপ্ন যেন থমকে আছে। অতীতে অনেক জনপ্রতিনিধি এ খালের উপর সাঁকো তৈরির কথা বললেও ভোটের পর তাদের আর দেখা মেলে না বলে স্থানীয়দের অভিযোগে।
জামগ্রামের বাসিন্দা জনি সোনার বলেন, বর্তমানে এ গ্রামে জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে অনেক লোক খালের পশ্চিম পারে জনবসতি গড়ে তুলেছেন। তাদের জরুরি স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে যাতায়াত ও কৃষি পণ্য পরিবহনে এখানে একটি সাঁকো নির্মাণ অতীব জরুরি। অনেক জনপ্রতিনিধিদের বলেও আমাদের এ দাবি বাস্তবায়ন হয়নি। ফলে এ গ্রামের হাজার হাজার মানুষকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
আত্রাই উপজেলা চেয়ারম্যান এবাদুর রহমান বলেন, এ খালের উপর একটি সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা আমাদের রয়েছে। জনস্বার্থে যতদ্রুত সম্ভব এটি বাস্তবায়ন করা হবে।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ