পটুয়াখালীর খেপুপাড়া-কলাপাড়া উপকূলের দিকে তীব্র বেগে ধেয়ে আসছে ঘুর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’। এর প্রভাবে পটুয়াখালীর উপকূল জুড়ে মাঝারি-ভারি বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। দমকা হাওয়া বইছে গোটা উপকূল জুড়ে। কুয়াকাটা সংলগ্ন বঙ্গোপসাগর আরও বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে। এ পর্যন্ত জেলার ৮ উপজেলায় মোট ৫০ হাজার ৮২২ জন মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়েছে। শেষ রাতে সিত্রাং আঘাত হানবে এমন খবর মাইকিংসহ বিভিন্ন মাধ্যমে জনসাধারণকে জানিয়ে তাদেরকে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বার বার বলা হচ্ছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে।
আজ সোমবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দেশের সর্বোচ্চ ৫১৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে পটুয়াখালী ও কলাপাড়া রাডার স্টেশন। নদ-নদীর পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তলিয়ে গেছে অর্ধশতসহ নিম্নাঞ্চল। গ্রামের পর গ্রাম তলিয়ে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে লাখ লাখ মানুষ। রাস্তাঘাট ফাঁকা অবস্থায় দেখা গেছে। ভোগান্তিতে পরেছে নিম্ন আয়ের মানুষ। ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং ধেয়ে আসার খবরে উপকূলের মানুষের মাঝে জানমালহানির আতংক দেখা দিয়েছে।
পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি উপকূলীয় জেলা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চর সমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৫-৮ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে বলে আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
কলাপাড়া রাডার স্টেশনের উচ্চ পর্যবেক্ষক মো. ফিরোজ কিবরিয়া জানান, আজ সোমবার ৩টা পর্যন্ত কলাপাড়া রাডার স্টেশন ২৬৩ মিলিমিটার এবং পটুয়াখালী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহবুবা সূখী জানান, সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘন্টায় ২৫৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের আঘাত হানার আশংকায় উপকূলীয় এলাকার জনসাধারণের জানমাল রক্ষাসহ ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় ইতিমধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার ৫০ হাজার ৮২২ জন মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে সরিয়ে নিরাপদে নেয়া হয়েছে বলে জানান জেলা দুর্যোগ-ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা সুমন কুমার দেবনাথ। প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও স্বেচ্ছাসেবকরা প্রচারণাসহ মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নেয়ার কাজ করছে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামাল হোসেন জানান, ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলার জন্য মানুষের জানমাল রক্ষা, আঘাত হানার পূর্বে উপকূলের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার জনসাধারণকে নিরাপদে কাছাকাছি আশ্রয় কেন্দ্রে সরিয়ে নেয়ার কাজ চলছে। জেলার ৮ উপজেলায় মোট ৭০৩টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়াও ২৬টি মুজিব কিল্লা প্রস্তুত রয়েছে। জেলায় প্রতিটি ইউনিয়নে মেডিকেল টিম, পর্যাপ্ত খাবার স্যালাইন, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট, শুকনা খাবার এবং নগদ অর্থ সরবরাহ করা হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল