কুষ্টিয়া সদর উপজেলার আলামপুরে মাসুদ করিম লাল্টুকে কুপিয়ে হত্যার দায়ে এক ইউপি চেয়ারম্যান ও তার ছেলেসহ ৬ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
একই সঙ্গে আদালত দণ্ডপ্রাপ্ত প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছর করে সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন।
এদিকে, অপর এক হত্যা মামলায় আদালত চার আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরো ৬ মাস সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার দিকে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-১ এর বিচারক মো. তাজুল ইসলাম চার আসামির উপস্থিতিতে এই রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন কুষ্টিয়া সদর উপজেলার আলামপুর ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আক্তারউজ্জামান বিশ্বাস (৫২), তার ছেলে মাহামুদুল হাসান (৩০), চেয়ারম্যানের দুই ভাই হাবিল উদ্দিন বিশ্বাস (৪৯), বাবলু বিশ্বাস (৪৬), কামরুজ্জামান বিশ্বাসের ছেলে রাশেদুল ইসলাম বিদ্যুৎ (৩৪) ও মৃত জলিল গাইনের ছেলে মাসুদ গাইন (৩৮)।
যাবজ্জীবন দণ্ডাদেশ প্রাপ্ত মাসুদ গাইন ও বিদ্যুৎ বর্তমানে পলাতক রয়েছেন। এ মামলায় অপর তিন আসামিকে ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সেই সঙ্গে তাদেরকে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে। রায় ঘোষণার পর পরই আসামিদের পুলিশ প্রহরায় জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।
এদিকে, এই মামলায় অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় ১৫ জনকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।
আদালত সূত্রে জানা যায়, কুষ্টিয়া সদর উপজেলার দহকুলা গ্রামে ২০১৬ সালের ২৮ এপ্রিল সকাল ৯টার দিকে আলামপুর ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দ্বন্দ্ব ও এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের কর্মী মোল্লা মাসুদ করিম লাল্টুকে কুপিয়ে হত্যা করে আসামিরা। এই ঘটনায় পরের দিন নিহতের ভাই মাহবুবুল করিম মোল্লা আসামিদের বিরুদ্ধে কুষ্টিয়া মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। নিহত মোল্লা মাসুদ করিম লাল্টু দহকুলা গ্রামের সোহরাব উদ্দিন মোল্লার ছেলে।
মামলার তদন্ত শেষে তদন্তকারী কর্মকর্তা আসামিদের বিরুদ্ধে ২০১৭ সালের ৪ জানুয়ারি আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। এরপর আদালত এ মামলায় সাক্ষীর সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন। নির্ধারিত ধার্য তারিখে আদালতের বিচারক মামলার আসামিদের শাস্তির এ আদেশ দেন।
আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অনুপ কুমার নন্দী বলেন, নির্বাচন কেন্দ্রীক দ্বন্দ্ব ও পূর্ব বিরোধের জের ধরে ওই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছিল। দোষী প্রমাণিত হওয়ায় আদালত আসামিদের যাবজ্জীবনসহ বিভিন্ন মেয়াদী সাজার এ আদেশ প্রদান করেন।
এদিকে, কুমারখালী উপজেলার অপর এক হত্যা মামলায় দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আশরাফুল ইসলাম চার আসামিকে বিশেষ যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ৬ মাস সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত