১২ জানুয়ারি, ২০২৩ ১৬:২৫

পাখির কলকাকলিতে মুখর হয়ে উঠেছে বাফলার বিল

আবদুল বারী, নীলফামারী

পাখির কলকাকলিতে মুখর হয়ে উঠেছে বাফলার বিল

খির কিচিরমিচির, খুনসুটি, উড়াউড়ি, মিতালি-মাতামাতি ও জলকেলিতে মুখর হয়ে উঠেছে বাফলার বিল। এসব পাখির পাখার ঝাপটা আর কোলাহলে আকাশ-বাতাস যেন মাতিয়ে রাখে। এমনটা চলছে সন্ধ্যা পর্যন্ত। সন্ধ্যার পর আশপাশের গাছগাছালি, বাঁশঝাড় ও কচুরিপানার ঝোপে যার যার আশ্রয় খুজে নেয় এরা। শীতের সকালে সোনালি রোদ আর গোধূলির মৃদু আলোয় তাদের অপূর্ব সৌন্দর্য ফুটে ওঠে প্রকৃতির কাছে। পাখির মিলন মেলা উপভোগ করছেন স্থানীয়রা। এ যেন এক অঘোষিত পাখির অভয়াশ্রম।

প্রতি বছর শীতে ওই বিলে আশ্রয় নেয় হাজার হাজার মাইল দূর থেকে আসা নানা প্রজাতির অতিথি পাখি। মায়াবি রূপের আধার হয়ে ওঠে বিলটি। এবারও শীতের আগমনে হাজার হাজার বালিহাঁস, পাতিসরালিসহ নানা জাতের পরিযায়ী জলচর পাখির মেলা বসেছে ওই বিলে। এসব পাখির নিত্যদিন ভোরের কুয়াশার আচঁলচিরে দলবেঁধে উড়াউড়ি করে সেখানে।পাখির ডানার শো-শো শব্দ, কলতানে ঘুমভাঙ্গে স্থানীয়দের। ঝাঁকে ঝাঁকে অতিথি পাখি এসে পড়ছে বিলের জলাশয়ে।

এ বিল পাখি আর মাছের জন্য নয়, অন্যান্য জলজপ্রাণী ও উদ্ভিদের জন্য একটি চমৎকার নিরাপদ আবাসস্থল। এর ওপর বিলে ফুটে থাকা হাজারও শাপলা ও পদ্ম ফুলে অন্যরকম রূপ নিয়েছে বিলটি।
নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার রনচন্ডি ইউনিয়নে অবস্থিত বাফলা গ্রাম। এই গ্রামটির উত্তর সিথানেই রয়েছে বিশাল বাফলার বিল। বিলের বিশাল জলাধারে রয়েছে বিভিন্ন রকমের দেশি প্রজাতির মাছ। 
স্থানীয়রা জানায়, পাখিগুলো প্রতি বছর শীতের আগমনে এখানে এসে আশ্রয় নেয়। সংসার পাতে, ছানা ফুটিয়ে বড় করে তারপর বসন্তে উড়াল দেয়। এমন নিরাপদ আবাসস্থল, খাদ্য আহরণের উপযুক্ত পরিবেশে দিন দিন বাড়ছে বিলুপ্ত প্রায় পাখির সংখ্যা। এছাড়া আছে পানকৌড়ি, চাপাখি, টুনটুনি, বেনেবউ, হাঁড়িচাচা, দোয়েল, শালিক, রাতচরা, কানাবক, সাদাবক, ধূসরবক, মাছরাঙ্গাসহ নাম না জানা অনেক  দেশীয় পাখি।
শতাধিক একরের সরকারি খাসভূক্ত জলাশয় এই বাফলার বিল। এর একাংশ দখলমুক্ত ও খনন করে তোলা হয়েছে মৎস্য অভয়ারণ্য। অপরদিকে মৎস্যজীবিরা বিশাল এলাকাজুড়ে মাছ রক্ষায় এর চারপাশ বাঁশের বেড়া (বানা) ও জাল দিয়ে নিরাপদ বেষ্টনি গড়ে তুলেছেন। ওই বেষ্টুনির মধ্যে বালিহাঁস, সরালির মত হাজার হাজার অতিথি পাখি অবস্থান করছে।

বিল পাড়ের বাসিন্দা আব্দুল মালেক বলেন, এলাকার মানুষ পাখির প্রতি সদয়।এখানে কাউকে পাখি শিকার করতে দেয় না তারা। তবে পাখির নিরাপত্তায় সরকারিভাবে পাখির অভয়ারণ্য ঘোষনা করা হলে শীত মৌসুমে আরো পাখি আসতে পারে বলে মনে করছেন তারা।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুর-ই-আলম সিদ্দিকী বলেন, একসঙ্গে এত পাখির আনাগোনা দেখলে চোখ জুড়িয়ে যায়। প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষার পাশাপাশি স্থানীয়দের বিনোদনের খোড়াক জুগিয়েছে এসব পাখি। বৃদ্ধি পেয়েছে পুরো এলাকার সৌন্দর্য। বিশেষ করে এ বিল পাখিদের নিরাপদ আবাসস্থলে পরিণত হয়েছে। এদের শিকারিদের হাত থেকে রক্ষায় জনসচেতনতাসহ নানা উদ্যেগ গ্রহণ করা হয়েছে।

বিডি প্রতিদিন/এএ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর