দেশের বিভিন্ন স্থানের মতো কনকনে তীব্র শীতে কাঁপছে হাওর অধ্যুষিত মৌলভীবাজার জেলার হাওর পাড়ের বাসিন্দারা। সরকারিভাবে জেলায় শীতার্তদের জন্য কম্বল আসলেও পর্যাপ্ত পাননি জেলার হাকালুকি, হাওর কাউয়াদিঘী, হাইল হাওরসহ ছোট বড় ৮টি হাওর পাড়ের বসবাসরত জেলে, দুস্থ, ছিন্নমূল ও শীতার্ত মানুষ। হাওর তীরের বাসিন্দারা শীতে অনেকটা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। হাওর পাড়ের বোরো চাষিরাও শীতে অনেকটা বিপর্যস্ত।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিকেল থেকে পরদিন সকাল ১০/১১টা পর্যন্ত ঘন কুয়াশায় ঢাকা থাকে হাওর এলাকা। তাই হতদরিদ্র মানুষের জীবনে বিপর্যয় নামে। শীতবস্ত্রের অভাবে হাওরের দরিদ্র মানুষেরা খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে। বেশি কষ্টের মধ্যে দিনাতিপাত করছেন জেলে সম্প্রদায়ের মানুষ। প্রচণ্ড শীতের কারণে বোরো চাষাবাদে মাঠে নামতে পারছেন না কৃষকরা।
মৌলভীবাজার জেলা দুর্যোগ ও ত্রাণ অফিস সূত্রে জানা যায়, এবারের শীতে জেলায় কম্বল এসেছে ৩৫ হাজার ২৮০ পিস। এর মধ্য থেকে জেলা প্রশাসক বিতরণ করেছেন ৩ হাজার ৬০০।
মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার হাওর কাউয়াদিঘী পাড়ের সামছুল মিয়া, শহীদ মিয়া, নেওয়া বেগমসহ অনেকেই বলেন, কয়েক দিন যাবত খুব বেশি শীত। আমরা দিনমজুর মানুষ টাকার অভাবে শীতের কাপড়ও কিনতে পারছি না। বর্তমান বাজারে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি। কোনোরকম খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছি।
রাজনগর উপজেলার হাওর অধ্যুষিত ফতেপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নকুল চন্দ্র দাশ বলেন, আমার ইউনিয়নের সব কয়টি গ্রাম হাওর সংলগ্ন। দরিদ্র মানুষের সংখ্যাও তুলনামূলক অন্যান্য ইউনিয়নের চেয়ে বেশি। অথচ এ শীতে আমার ইউনিয়নে সরকারিভাবে মাত্র ৩০০ পিস কম্বল দেয়া হয়েছে।
বড়লেখা উপজেলার তালিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এখলাছুর রহমান বলেন, এবার মাত্র ৪০০ কম্বল পেয়েছি। ৪ হাজার দিলেও আমার ইউনিয়নের চাহিদা মিটবে না।
জেলা ত্রাণ ও দুর্যোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ ছাদু মিয়া বলেন, প্রত্যেক ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের কাছে সরকারি বরাদ্দের কম্বল পৌঁছানো হয়েছে। চেয়ারম্যানরা কিভাবে বিতরণ করছেন, বিষয়টি আমরা অবগত না।
বিডি প্রতিদিন/এমআই