কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে পূর্ব শত্রুতা ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে মাদক ব্যবসায়ীদের মধ্যে সংঘর্ষে মঞ্জু মন্ডল (৫০) নামে একজন নিহত হয়েছেন। রবিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
নিহত মঞ্জু মন্ডল উপজেলার প্রাগপুর ইউনিয়নের সীমান্ত সংলগ্ন বিলগাথুয়া গ্রামের নুর হোসেন মন্ডলের ছেলে।
এ ঘটনার জের ধরে রবিবার সন্ধ্যায় বিলগাথুয়া গ্রামে প্রতিপক্ষের লোকজন অন্তত ১০টি বাড়িতে আগুন জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দেয় এবং গরু-ছাগলসহ ঘরের আসবাবপত্র লুট করে। খবর পেয়ে দৌলতপুর থানা পুলিশ ও ভেড়ামারা ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
স্থানীয়রা জানায়, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গত শুক্রবার বিকেলে বিলগাথুয়া গ্রামে দুই দল মাদক ব্যবসায়ীর মধ্যে সংঘর্ষ ও ককটেল বোমা বিস্ফোরণে আহত মঞ্জু মন্ডল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এ খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে প্রতিপক্ষের লোকজন তৌহিদুল মালিথা, মহিদুল মালিথা, আশরাফুল ইসলাম মালিথা ও চাঁদ আলী মালিথাসহ ১০টি বাড়িতে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। এ সময় ওইসব বাড়িতে পুরুষ মানুষ না থাকায় গরু, ছাগল ও ঘরের মূল্যবান আসবাবপত্র লুটপাট করে নিয়ে যায়। বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ ও লুটের ঘটনার খবর পেয়ে দৌলতপুর থানা পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
প্রাগপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আশরাফুল ইসলাম মুকুল বলেন, গত শুক্রবার বিলগাথুয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির ভোট, আধিপত্য বিস্তার, মাদক ব্যবসা ও পূর্ব শত্রুতার জেরে দুই পক্ষের সংঘর্ষ হয়। এই ঘটনায় আহত মঞ্জু রবিবার বিকেলে মারা গেছে। আসামি পক্ষের লোকজন পলাতক রয়েছে। মঞ্জু মারা যাওয়াই বাদী পক্ষের লোকজন আসামিপক্ষের লোকজনদের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং লুটপাট করে। উভয়পক্ষ মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত।
এ বিষয়ে দৌলতপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মজিবুর রহমান বলেন, ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এই ঘটনা থানায় একটি মামলা হয়েছে। কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেফতার করতে কাজ করছে পুলিশ।
গত শুক্রবার বিকেল ৫টার দিকে উপজেলার প্রাগপুর ইউনিয়নের সীমান্ত সংলগ্ন বিলগাথুয়া ঈদগাহ মাঠে শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী সেন্টু তার লোকজন নিয়ে স্থানীয় ঈদগাহ মাঠে অবস্থান করছিল। এ সময় মাদক ব্যবসা সংক্রান্ত পূর্ব বিরোধের জের ধরে সীমান্তের অপর শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী আকিদুলের নেতৃত্ব লালন, সান্টু, ঝন্টু ও মিন্টুসহ ১০-১২ জন সশস্ত্রসহ ঈদগাহ মাঠে সেন্টুর লোকজনের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এতে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। ঘণ্টাব্যাপী চলা এ সংঘর্ষে একে অপরকে লক্ষ্য করে ককটেল বিস্ফোরণ, ইট-পাটকেল নিক্ষেপ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে মাদক ব্যবসায়ী সেন্টু পক্ষের রাজিব, মঞ্জু, মিলন ও কাবের আহত হন। তাদের মধ্যে মঞ্জুর মৃত্যু হয়েছেন।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল