বিশ্বের বৃহত্তম পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রটি পুনরায় চালুর অনুমোদন দেয়ার ব্যাপারে আরও এক ধাপ এগোলো জাপান। ২০১১ সালের ফুকুশিমা দুর্ঘটনার পর এই প্রথম কেন্দ্রটি চালু হওয়ার পথে।
নিগাতা অঞ্চলে কাশিওয়াজাকি-কারিওয়া বিদ্যুৎকেন্দ্রটি অবস্থিত। ওই অঞ্চলের গভর্নর হিদেয়ো হানাযুমি আংশিকভাবে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি পুনরায় চালুর জন্য সবুজ সংকেত দিয়েছেন বলে জানা গেছে। এটি চালু হলে ফুকুশিমা বিপর্যয়ের পর জাপানে টেপকো পরিচালিত প্রথম পরমাণু চুল্লির কার্যক্রম শুরু হবে। উল্লেখ্য, টেপকোই ফুকুশিমা বিদ্যুৎকেন্দ্রের অপারেটর ছিল।
তবে এখনও বিদ্যুৎকেন্দ্রটি চালু করতে হলে নিগাতা প্রিফেকচারের সরকার পরিষদ এবং জাপানের পরমাণু নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদন প্রয়োজন হবে।
শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে গভর্নর হানাযুমি জানান, তার এই সিদ্ধান্ত ডিসেম্বর মাসে প্রিফেকচারাল সরকার পরিষদের সভায় আলোচনা করা হবে এবং তিনি পরিষদের অনুমোদন চাইবেন। প্রাথমিক অবস্থায় কাশিওয়াজাকি-কারিওয়া প্ল্যান্টের ৬ নম্বর চুল্লি এবং পরে ৭ নম্বর চুল্লির কার্যক্রম শুরু করার অনুমোদন চাওয়া হচ্ছে।
২০১১ সালে ৯ মাত্রার ভূমিকম্প ও সুনামির কারণে ফুকুশিমা প্ল্যান্টে বিপর্যয় ঘটেছিল। যার ফলে তেজস্ক্রিয়তা ছড়িয়ে পড়ে এবং প্রায় ১ লাখ ৫০ মানুষকে এলাকা ছেড়ে সরে যেতে হয়েছিল। এর ফলস্বরূপ জাপান তাদের সব পরমাণু চুল্লি বন্ধ করে দিয়েছিল। যদিও সেই থেকে এখনও পর্যন্ত ১৪টি চুল্লি পুনরায় কাজ শুরু করেছে।
টেপকো বর্তমানে ফুকুশিমা দুর্ঘটনার ক্ষতিপূরণ বাবদ ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন জাপানি ইয়েন পরিশোধ করছে এবং প্ল্যান্টটির বন্ধ করে দেওয়ার খরচও বহন করছে।
নিগাতার বাসিন্দারা প্ল্যান্টটি পুনরায় চালুর বিষয়ে বিভক্ত। গত মাসে প্রকাশিত এক সমীক্ষায় দেখা যায়, সেখানকার ৫০ শতাংশ বাসিন্দা পুনরায় চালুর পক্ষে থাকলেও ৪৭ শতাংশ এর বিরুদ্ধে। তবে প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষই টেপকোর পরিচালনার দক্ষতা নিয়ে উদ্বেগে রয়েছে।
সাম্প্রতিক এই সিদ্ধান্তটি জাপানের জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা কমাতে এবং নেট জিরো কার্বন নিঃসরণের লক্ষ্য পূরণে সহায়ক হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল