ডাকাতি মামলার আসামির সঙ্গে নামের মিল থাকায় নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলার এক কৃষক বিনা অপরাধে তিন সপ্তাহ ধরে জেল খাটছেন বলে অভিযোগ করেছেন তার পরিবারের সদস্যরা। এ ঘটনায় পুলিশের গাফিলতিকে দায়ী করছেন পরিবার ও এলাকাবাসী।
স্থানীয় এবং জনপ্রতিনিধিরা জানান, পুলিশের কাছে বারবার প্রমাণ দিলেও পুলিশ বিষয়টির তোয়াক্কা করেনি। নির্দোষ ছেলেকে ডাকাতি মামলায় বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা কিছুতেই মানতে পারছেন না মা, মেয়ে ও স্ত্রীসহ আত্মীয়স্বজন।
জানা গেছে, পূর্বধলার গোহালাকান্দা ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কিসমত বারেঙ্গা গ্রামের নাজিম উদ্দিন প্রায় ১৭ বছর আগে তার ঘরবাড়ি বিক্রি করে অন্যত্র চলে যান। পরে তিনি সুনামগঞ্জের নৈগাং এলাকায় বিয়ে করেন। ২০১৩ সালের ৪ মে সিলেটে জলালাবাদ থানায় তার বিরুদ্ধে একটি ডাকাতি মামলা হয়। গত বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর ওই মামলার রায়ে তাকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। কিন্তু রায় ঘোষণার সময় তিনি পলাতক ছিলেন। পরে আদালত আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।
এ ঘটনায় গত ২৯ জানুয়ারি কিসমত বারেঙ্গা গ্রামের নাজিম উদ্দিনকে গ্রেফতার না করে ৬ নম্বর ওয়ার্ডের হাটবারেঙ্গা গ্রামের নাজিম উদ্দিনকে গ্রেফতার করে। সেই থেকে বিনা অপরাধে নাজিম উদ্দিন সিলেট কারাগারে রয়েছেন।
তবে গ্রেফতার করা দিনমজুর নাজিম উদ্দিনকে নির্দোষ দাবি করছেন স্বজনরা। ওই মামলায় প্রকৃত আসামি যাচাই-বাছাই না করেই দিনমজুর নাজিম উদ্দিনকে ধরে নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তিনি পূবর্ধলা উপজেলার গোহালাকান্দা ইউনিয়নের হাটবারেঙ্গা গ্রামের মৃত মিরাজ আলীর ছেলে। এলাকার মানুষ তাকে ভালোভাবে চেনেন।
৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য দিদারুল ইসলাম শামীম জানান, চেয়ারম্যান স্বাক্ষরিত একটি প্রত্যয়ন দিয়েছি। একই নাম হওয়ায় তাকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ গ্রেফতারের পর থেকে জনপ্রতিনিধিসহ স্থানীয়রা বিষয়টির প্রতিবাদ করলেও থানা পুলিশ কোনো পাত্তা দেয়নি বলে জানান গোহালাকান্দার সাবেক চেয়ারম্যান হাসনাত জামান খোকন।
এ বিষয়ে পূর্বধলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, আমরা নাম-ঠিকানায় সত্যতা পেয়েই গ্রেফতার করেছি। তথ্যে কোনো প্রকার ভুল নেই। তাদের কাছে সঠিক না হলে তারা আদালতে প্রমাণ করবে। এতে আমাদের কোনো সমস্যা নেই।
এদিকে বিষয়টির তদন্ত করে ব্যবস্থাসহ ভুক্তভোগী নাজিম উদ্দিনকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে বলে জানান পুলিশ সুপার মো. ফয়েজ আহমেদ।
বিডি প্রতিদিন/এমআই