বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ক্ষমতাসীনদের উদ্দেশে বলেছেন, এখনো সময় আছে সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা যুক্ত করুন। স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করে শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। আমরা গণতান্ত্রিক পন্থায় কর্মসূচি পালন করছি। জনগণকে সম্পৃক্ত করার চেষ্টা করছি, জনগণ রাস্তায় নামছে।
রবিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদসহ কারাবন্দিদের মুক্তির দাবিতে জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা (জাসাস) এ মানববন্ধনের আয়োজন করে।
আয়োজক সংগঠন জাসাস’র আহ্বায়ক চিত্রনায়ক হেলাল খানের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব জাকির হোসেন রোকনের পরিচালনায় বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, জাসাস’র যুগ্ম আহ্বায়ক লিয়াকত আলী, মো. জাকির হোসেন ও জাহেদুল আলম হিটো প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, সংবিধান দেশ ও দেশের জনগণের জন্য। কোনো ব্যক্তি বা দলের জন্য নয়। আপনারা (আওয়ামী লীগ) ক্ষমতায় আসার পরই সর্বপ্রথম সংবিধান থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিলুপ্ত করেছেন।
তিনি বলেন, সংবিধান কোরআন, বাইবেল, গীতা বা আল্লাহ প্রদত্ত কোনো ধর্মগ্রন্থ নয়- যে এটা পরিবর্তন করা যায় না। সংবিধান পরিবর্তন করা যায়। ৭২-এ যে সংবিধান তৈরি হলো এর কিছুদিন পরই আপনারা তাতে সংশোধন আনলেন। এরপর দ্বিতীয় সংশোধন করলেন, তৃতীয় সংশোধন করলেন, চতুর্থ সংশোধনের মধ্য দিয়ে আপনারা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা বিলুপ্ত করলেন। গণতন্ত্রকে নির্বাসিত করলেন, সংবাদপত্রের কণ্ঠরোধ করলেন।
গয়েশ্বর চন্দ্র বলেন, আওয়ামী লীগের লোকেরা এখন বলছেন- সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নেই। কিন্তু সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ১৯৯৫-৯৬ সালেও ছিল না। তখন আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ও জামায়াতে ইসলাম এই তিনটি দল মিলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি তুলে সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার এক বছরের আগেই তারা সংসদ থেকে পদত্যাগ করেন। সংঘবদ্ধ কারণে সংবিধানের ধারাবাহিকতা রক্ষায় নির্বাচন হয়, সেই নির্বাচনে বেগম খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী হয়ে সরকার গঠন করেন। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংযুক্ত করে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেন। সে নির্বাচনে সব দল অংশগ্রহণ করে। এগুলো আপনাদের মনে থাকার কথা।
স্থায়ী কমিটির এই সদস্য আরও বলেন, সংবিধান অনুযায়ী দেশ চলছে না। যদি সংবিধান অনুযায়ী দেশ চলতো- তাহলে দিনের ভোট রাতে হতো না। আমাদের দাবি একটাই, একটি নিরপেক্ষ, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন। এই সুষ্ঠু নির্বাচনের সবচেয়ে বড় বাধা বর্তমান সরকার। সে কারণেই এই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে, এই নির্বাচন কমিশনকে বিদায় নিতে হবে এবং অভিজ্ঞতাসম্পন্ন লোকদের দিয়ে নিরপেক্ষ সরকার গঠন করতে হবে।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক