ইভটিজিং এবং কলেজ ছাত্রীর বাবা-চাচাকে কুপিয়ে আহত করার ঘটনার মামলায় ফরিদপুরের সালথা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রায় মোহন কুমার রায়কে (২৮) গ্রেফতার করেছে ফরিদপুর র্যাব।
ফরিদপুর র্যাব-৮ এর কোম্পানি অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কমান্ডার কে এম শাইখ আকতার ছাত্রলীগ নেতা রায়মোহনকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সোমবার রাত ৮টার দিকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলা সদরের বাস টার্মিনাল এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। পরে রাতেই রায়মোহনকে ফরিদপুরের সালথা থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মো. সাদিক জানান, গ্রেফতার ছাত্রলীগ নেতা রায়মোহনের সঙ্গে একটি মেয়ের চার বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। গত দুই মাস ধরে তাদের বিচ্ছেদ হয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত ১০ মার্চ দুই পরিবারের লোকজন এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ স্থানীয়ভাবে শালিস করে। সেই শালিসে উভয় পক্ষের লোকজনের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় সালথা থানায় একটি মামলা হয়। ওই মামলায় তাকে গ্রেফতার করে র্যাব-৮।
এর আগে গত ১০ মার্চ সালথায় ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় কলেজ ছাত্রীটির বাবা, চাচা ও চাচাতো ভাইকে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ ওঠে সালথা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রায়মোহন কুমার রায়ের বিরুদ্ধে। ঘটনার পর চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে বিচার না পেলে আত্মহত্যার হুমকি দেন ফরিদপুরের একটি সরকারি কলেজের ছাত্রী এবং আটঘর ইউনিয়নের গৌড়দিয়া গ্রামের উত্যক্তের শিকার ওই তরুণী।
ভুক্তভোগী কলেজ ছাত্রী জানান, রায় মোহন তাকে স্কুলে পড়াকালীন থেকেই নানাভাবে উত্যক্ত করে আসছিল। এ নিয়ে একাধিকবার শালিস-বৈঠকও হয়। মাঝে কিছুদিন তাকে বিরক্ত না করলেও ছাত্রলীগের সভাপতির পদ পাওয়ার পরেই সে বেপরোয়া হয়ে ওঠে।
ওই ছাত্রী বলেন, রায় মোহন তাকে প্রতিনিয়ত প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। একাধিকবার নিষেধ করা সত্ত্বেও দলবল নিয়ে তাকে ইভটিজিং করতো। সম্প্রতি রাস্তায় জোরপূর্বক তার হাত ধরে মোটরসাইকেলে উঠিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে রায় মোহন। এতে বাধা দিলে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসে। এ সময় তার বাবা-চাচাসহ স্বজনেরা এগিয়ে এলে রায় মোহনের সাথে থাকা লোকজন তাদের মারধর করে। এ ঘটনার পর তার কলেজে যাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। বর্তমানে তিনি বাড়িতেই থাকছেন। ভুক্তভোগী ছাত্রী জানান, তিনি ও তার পরিবারের সদস্যরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
এদিকে, ছাত্রলীগ নেতা রায় মোহন রায়ের বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগের বিষয়ে জেলা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে ৬ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল