যমুনা নদীর পানি সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে কমলেও নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে তীব্র ভাঙন শুরু হয়েছে। নদীর ডানতীর শাহজাদপুরের পাঁচিল, এনায়েতপুরের ব্রাহ্মগন গ্রাম ও বামতীর চৌহালী উপজেলার চরসলিমাবাদে ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়েছে। গত কয়েকদিনের ব্যবধানে এসব অঞ্চলে সহস্রাধিক বসতভিটা বিলীন হয়ে গেছে। ফসলি জমি ও বসতভিটা হারিয়ে অনেকে খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবনযাপন করছে। ভাঙনের হুমকির মুখে রয়েছে হাজার হাজার বসতভিটা, গাছপালা ও ফসলি জমিসহ বহু প্রতিষ্ঠান। ভাঙনের শিকার পরিবারগুলো ঈদ আনন্দ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ভাঙন কবলিতদের অভিযোগ, পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাফিলতির কারণে এ ভাঙন দেখা দিয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, এনায়েতপুরের ব্রাহ্মনগ্রাম থেকে পাঁচিল পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৬শ কোটি টাকা ব্যয়ে নদী তীর সংরক্ষণ প্রকল্প গ্রহণ ও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশও দেয়া হয়। কিন্তু ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ও পানি উন্নয়ন বোর্ড সময়মতো কাজ না করায় ব্রাহ্মনগ্রাম ও পাঁচিল এলাকায় গত দুই সপ্তাহ ধরে ব্যাপক ভাঙন দেখা দেয়। ভাঙনে প্রায় শতাধিক বসতভিটা বিলীন হয়ে যায়। তাদের অভিযোগ, ভাঙনরোধে জিওব্যাগ প্রস্তুত থাকলেও তা নদীতে নিক্ষেপ করা হয়নি।
পাঁচিল গ্রামের আব্দুল হালিম জানান, দশ আগেও আমাদের বাড়িঘর সব ছিল। নদীতে সব হারিয়ে পথে বসেছি। নদী গর্ভে ঘর-বাড়ি বিলীন হওয়ায় কোথাও যাওয়ার মত অবস্থা নেই তাদের। মাথা গোঁজার ঠাঁই হারিয়ে এখন ভাসমান মানুষে পরিণত হয়েছি। ঘরে চাল-চুলা নেই। ঈদের আনন্দ আমাদের কপালেও নেই।চৌহালী চরসলিমাবাদ এলাকার বাসিন্দা হাসান আলী জানান, গত ১৫ দিনের ব্যবধানে একটি গ্রামের অর্ধেক নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। শুধু মাত্র পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাফিলতির কারণে। কিছুদিন জিওব্যাগ ফেলার পর বন্ধ করে দেয়ায় কয়েকদিনের মধ্যেই প্রায় সহস্রাধিক বসতভিটা, ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। গ্রামবাসী মানববন্ধন করার পর নতুন করে আবার জিওব্যাগ ডাম্বিংয়ের কাজ শুরু করেছে। তারপরেও প্রতিদিন নদী ভাঙছে। এ অবস্থায় এলাকাবাসী অবিলম্বে ভাঙন রোধে ব্যবস্থা গ্রহণে জোরপদক্ষেপ দাবি করছেন।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী রনজিত কুমার জানান, নদীর পানি কমা এবং বাড়ার সাথে ভাঙন শুরু হয়। বর্তমানে নদীর কয়েকটি পয়েন্টে ভাঙন রয়েছে। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড ভাঙনরোধে জিওব্যাগ নিক্ষেপ করে ভাঙনরোধের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
বিডি প্রতিদিন/এএ