কক্সবাজারের টেকনাফে একটি বসতঘর থেকে হেরোইন, ইয়াবা, অস্ত্র, তাজা কার্তুজ ও ম্যাগাজিন উদ্ধার করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সদস্যরা। তবে এ ঘটনায় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। তবে মাদক কারবারে জড়িত সাতজনকে পলাতক আসামি করা হয়েছে।
রবিবার দুপুর থেকে বিকেল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত টেকনাফ সদর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিম গোদারবিল গ্রামের বাসিন্দা মোহাম্মদ সাজেদের ভাড়া করা বসতঘর থেকে এসব উদ্ধার করা হয়।
পরে রাত সাড়ে ৯টার দিকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর টেকনাফ জোনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক মো. জাফরুল্ল্যাহ কাজল। এসময় উপস্থিত ছিলেন টেকনাফ বিশেষ জোনের সহকারী পরিচালক মো. সিরাজুল মোস্তফা, কক্সবাজার উপ-পরিচালক মো. রুহুল আমিন ও চট্টগ্রাম মেট্রো (উত্তর) সহকারী পরিচালক রামেশ্বর দাস প্রমুখ।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, রবিবার গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর টেকনাফ বিশেষ জোন জানতে পারে ইয়াবা, অস্ত্র ও তাজা কার্তুজ মজুদ রাখা হয়েছে একটি বসতঘরে। এর সূত্র ধরে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর টেকনাফের পরিদর্শক বিদ্যুৎ বিহারি নাথের নেতৃত্বে একটি বিশেষ টহলদল টেকনাফ সদর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিম গোদারবিল গ্রামের বাসিন্দা মোহাম্মদ সাজেদের ভাড়া করা বসতঘরে অভিযান গেলে মাদক কারবারিরা পালিয়ে যায়। পরে ওই ঘরে তল্লাশি চালিয়ে ৭০০ গ্রাম হেরোইন, ৫৩ হাজার পিস ইয়াবা, ৩টি বিদেশি নাইন এমএম পিস্তল, একটি বিদেশি পিস্তল, ১৪১ রাউন্ড তাজা কার্তুজ, তিনটি ম্যাগাজিন উদ্ধার করা হয়েছে। তবে এ ঘটনায় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। এ ঘটনায় পৃথক দুটি মামলায় সাতজনকে পলাতক আসামি করা হয়েছে।
পলাতক আসামি হলেন-টেকনাফ সদর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড মধ্যম গোদার বিলের আবু সৈয়দের ছেলে আবদুল্লাহ (২৮), একই ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড উত্তর লম্বরীর হোছন আহম্মদের ছেলে কাদের (৩৫), একই ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড পশ্চিম গোদার বিলের ইমাম হোসেনের ছেলে সাহেদ প্রকাশ সাজেদ (২৪), একই ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড পশ্চিম গোদার বিলের ইমাম হোসেনের ছেলে শাহ আলম (২০), একই ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড দক্ষিণ লেঙ্গুর বিলের হোছন আহম্মদ সাদ্দাম (২৮), দক্ষিণ লেঙ্গুর বিলের বশির আহম্মদের ছেলে আনোয়ার (৩৫) ও গোদার বিলের কালা মিয়ার ছেলে মো. কাসিম(৩২)।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক মো. জাফরুল্ল্যাহ কাজল বলেন, মূলত মাদক কারবারিরা শক্তি প্রয়োগ করতে মিয়ানমার থেকে মাদকের সঙ্গে অস্ত্রের চালান মজুত করছে। অস্ত্রগুলো সামনের নির্বাচনে ব্যবহার করতেও মজুত করা হতে পারে। আমরা কোনো অস্ত্র বা মাদক কারবারিকে ছাড় দিচ্ছি না। এ ঘটনার পেছনে যারা জড়িত, তাদের খুঁজে বের করতে তদন্ত চলছে। এ ঘটনায় সাতজনকে পলাতক আসামি করে টেকনাফ থানায় মাদক নিয়ন্ত্রণ আইন ও অস্ত্র আইনে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করার প্রস্তুতি চলছে।
তিনি আরও বলেন, পলাতক আসামিদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮ (সংশোধিত ২০২০) এর সংশ্লিষ্ট ধারায় এবং আগ্নেয়াস্ত্র আইনে সংশ্লিষ্ট থানায় পৃথক দুটি নিয়মিত মামলা দায়ের প্রক্রিয়া চলমান।
বিডি প্রতিদিন/এমআই