কুষ্টিয়ায় কুকুরের চেয়ে বিড়ালের কামড় বা আচড়ে জলাতঙ্ক প্রতিষেধক টিকা নেওয়ার হার বেড়েছে হাসপাতালগুলোতে। জেলা পর্যায়ে মাসে ৩ থেকে ৪ হাজার মানুষ আসছেন টিকা নিতে। তবে, চিকিৎসকরা বলছেন- সচেতনতার অভাবে এখনো অনেকেই টিকা নিতে আসছেন না। এদিকে পথকুকুর ও বিড়ালকে টিকা দেওয়ার কর্মসূচি নিয়মিত চালিয়ে যাওয়ার দাবি জানিয়েছেন আক্রান্তরা।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসেবে বিশ্বে বছরে প্রায় ৬০ হাজার মানুষ জলাতঙ্কে মারা যায়। এই মৃত্যুর হার কমাতে বাংলাদেশেও জেলায় জেলায় ‘ম্যাস ডগ ভ্যাক্সিনেশন’ কর্মসূচির আওতায় ব্যাপকহারে কুকুর-বিড়ালকে টিকা দেয়া হয়েছে। গত মার্চে এ কর্মসূচির দ্বিতীয় ধাপে কুষ্টিয়ায় প্রায় সাতাশ হাজার পথকুকুর ও বিড়ালকে টিকা দেওয়া হয়।
কুষ্টিয়া সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সোনিয়া কাউকাবী বলেন, সেসময় আমরা ৮৯ ভাগ কুকুরকে টিকার আওতায় আনতে পেরেছি। এর বাইরেও পোষা প্রাণীদেরও টিকা দেওয়া হচ্ছে জেলা-উপজেলা ভেটেরিনারি হাসপাতালে।
বুধবার দুপুরে পোষা বিড়াল নিয়ে কুষ্টিয়া ভেটেরিনারি হাসপাতালে আসা সোহেল রানা বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বাড়ির শিশুদের নিরাপদ রাখতে ডাক্তারের পরামর্শেই র্যাবিসের টিকা দিচ্ছি।
এদিকে কুষ্টিয়ার হাসপাতালগুলোতে প্রাণীর কামড়ে বা আচড়ে টিকা নিতে আসাদের ভিড় বেড়েছে। শিশু রামিমকে নিয়ে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে আসা তার বাবা আসলাম বলেন, কুকুর-বিড়ালকে নিয়মিত টিকা দিলে আামাদের জলাতঙ্কের ভয় দূর হতো। একই দাবি জানান টিকা নিতে আসা অপর মহিলা মরিয়ম। এই হাসপাতালের ভ্যাকসিন ইনচার্জ মোছা: সাহার বানু বলেন, প্রতিদিন গড়ে ১১০ জন বিনামূল্যে জলাতঙ্ক প্রতিষেধক টিকা নিতে আসছেন। এদের মধ্যে কুকুরের চেয়ে বিড়ালের কামড় বা আচড়ে আক্রান্তরাই বেশি। তিনি বলেন, বিড়াল পোষার প্রবণতা বেড়েছে। সে কারণে বাড়ি থেকে কামড় বা আচড় দিলে এরা টিকা নিতে চলে আসছেন।
হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. তাপস কুমার সরকার বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালেই প্রতি মাসে ১ হাজার ৪শ থেকে দেড় হাজার মানুষ টিকা নিতে আসছেন। তবে, সচেতনতার অভাবে কামড় বা আচড়ে আক্রান্ত অনেকেই আসছেন না টিকা নিতে। তিনি বলেন, জলাতঙ্ক হয়ে গেলে আর রক্ষা নেই, তাই প্রাণির কামড় বা আচড়ে আক্রান্ত হলে প্রতিষেধক টিকা নিতে দ্রুত চিকিৎসা কেন্দ্রে আসতে হবে। কোনো প্রাণী কামড় বা আচড় দিলে সেখানে ১৫ মিনিট ধরে সাবান দিয়ে ভালো করে ধুয়ে ফেলার পরামর্শ দেন তিনি। এতে র্যাবিসের সেল অনেকটা মরে যাবে বলে তিনি জানান।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল