গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সদর থানাধীন দক্ষিণ ছায়াবীথি এলাকায় সিয়ামকে হত্যাকান্ডের প্রধান আসামি আরাফাতকে লক্ষ্মীপুর জেলার মান্দারী বাজার এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১ ও র্যাব-১১। বুধবার দিবাগত রাতে আসামী মো: আরাফাতকে লক্ষীপুর জেলার মান্দারীবাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয়। র্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত মো: আরাফাত এই হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত মর্মে স্বীকার করে।
গ্রেফতারকৃত মো: আরাফাত (২২) গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সদর থানার দক্ষিণ ছায়াবিথী এলাকার মো: মইনউদ্দিনের ছেলে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে র্যাব কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিং এ বিষয়টি নিশ্চিত করেন, র্যাব-১ এর স্পেশালাইজড কোম্পানী গাজীপুরের পোড়াবাড়ি ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার মেজর মো: ইয়াসির আরাফাত হোসেন।
উল্লেখ্য, গত ২৭ এপ্রিল (২০২৩) দুপুরে গাজীপুর শহরের সদর থানাধীন ছায়াবিথী ফণিরটেক এলাকায় ধানক্ষেতের কাছে ২০ বছরের এক যুবকের হাত-পা বাঁধা ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোঁপানো অজ্ঞাত একটি লাশ উদ্ধার করে জিএমপি সদর থানা পুলিশ। উদ্ধারকৃত লাশটি গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সদর থানার ছোট দেওড়া গ্রামের মো: সফিকুল ইসলামের ছোট ছেলে সিয়ামের (২০) বলে শনাক্ত করা হয়।
র্যাব-১ এর স্পেশালাইজড কোম্পানী গাজীপুরের পোড়াবাড়ি ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার মেজর মো: ইয়াসির আরাফাত হোসেন জানান, গ্রেফতারকৃত আসামী প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে র্যাবকে জানায়, সেতু (ছদ্মনাম) নামে একটি মেয়ের সঙ্গে তার (আরাফাত) প্রেমের সম্পর্ক ছিলো। ঘটনার ৫ দিন আগে সেতুর (ছদ্মনাম) আত্মীয়ের বাড়ী গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সদর থানার ছোট দেওড়া এলাকায় তার বান্ধবীর সঙ্গে ঘুরতে গেলে ভিকটিম সিয়ামের সঙ্গে পরিচয় হলে ফেইসবুক আইডি নেওয়া-দেওয়া হয় এবং তাদের মাঝে ফেইসবুক ম্যাসেঞ্জারের মাধ্যমে বন্ধুসুলভ চ্যাট হয়। অন্যদিকে হত্যাকান্ডের মূল পরিকল্পনাকারী আরাফাত তার প্রেমিকা সেতুর (ছদ্মনাম) ফেইসবুক আইডি তার নিজ মোবাইলে লগ-ইন করে রাখে। এতে করে প্রেমিকা সেতু (ছদ্মনাম) ম্যাসেঞ্জার আইডি দ্ধারা ভিকটিম সিয়ামের সঙ্গে তাদের যে কথোপকথন বা চ্যাট করতো তার বিস্তারিত আরাফাতের নিজের মোবাইলে দেখতে পেতো। এভাবে নিহত সিয়ামের সঙ্গে সেতুর (ছদ্মনাম) চ্যাট দেখতে দেখতে একসময় আসামী আরাফাতের ভিকটিম সিয়ামের উপর চরম ক্ষোভ/আক্রোশ জমতে থাকে এবং ভিকটিম সিয়ামকে মেরে ফেলার পরিকল্পনা করে। এরপর গত ২৬ এপ্রিল রাত সাড়ে ৭টার দিকে সিয়ামকে কৌশলে তথা আরাফাতের মোবাইল লগইন থাকা তার প্রেমিকা সেতুর (ছদ্মনাম) ম্যাসেঞ্জারে আইডি থেকে আসামী মো: আরাফাত নিজেই তার পরিচয় গোপন করে সেতু (ছদ্মনাম) সেজে ভিকটিম সিয়ামের সঙ্গে চ্যাট করে এবং ঘটনাস্থলে এসে তার সঙ্গে দেখা করতে বলে। সদ্য পরিচয় এবং নিজের ভাললাগা থেকে নিহত সিয়াম তার নতুন প্রেমিকা সেতু (ছদ্মনাম) দেখা করার জন্য নির্দিষ্ট সময়ে উল্লেখিত ঘটনাস্থলে আসে। পূর্ব থেকে ওৎ পেতে থাকা আসামী মো: আরাফাতসহ ১০/১৫ জনের একটি গ্রুপ আরাফাতের নির্দেশে ভিকটিমের হাত ও পা বেঁধে এলোপাতাড়ি ধারালো চাপাতি, সুইচ গিয়ার চাকু ও দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কোপিয়ে হত্যা করে। গত ২৮ এপ্রিল (২০২৩) নিহতের পিতা মো: শফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে জিএমপির সদর থানায় অজ্ঞাত আসামীদের নামে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে জিএমপি’র সদর থানার পুলিশ এই হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ৬ জন আসামিকে গ্রেফতার করে।
বিডি প্রতিদিন/এএম