এবার হাইব্রিড উইন ৩০২,৩০৫ ধানের ভালো ফলনে খুশি কুমিল্লার কৃষকরা। এই ধান চিকন হওয়ায় মণে দুইশ’ টাকা বেশি দাম পাচ্ছেন। কুমিল্লার লাকসাম, নাঙ্গলকোট, দেবিদ্বার, বুড়িচং, ব্রাহ্মণপাড়াসহ ১৭ উপজেলায় এই ধানের ভালো ফলন হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুমিল্লার সূত্র মতে, এবছর কুমিল্লায় এক লক্ষ ৬১ হাজার ৭৯০ হেক্টর জমিতে বোরোর আবাদ হয়েছে। এবার উইন ৩০২,৩০৫.এসএলএইটএইচ,স্বর্ণা সুপার, ব্রি ধান ৭৪ , ব্রি ধান৮৯, ব্রি ধান ৯২ ও বঙ্গবন্ধু ধান ১০০ আবাদে কৃষকের আগ্রহ বৃদ্ধি পেয়েছে।
লাকসামের গোপালপুর মাঠে গিয়ে দেখা যায়,মাঠে প্রচণ্ড রোদ। রোদে ঝলঝল করছে সোনালি ধান। কৃষক ও শ্রমিকদের কাজে রোদ কোন বাধা হতে পারেনি। তারা ধান কাটছেন,কাধে ধানের ভার নিয়ে বাড়ির দিকে ছুটছেন। মাঝে মধ্যে সড়কের দ্বারে গাছের নিচে বসে বিশ্রাম নিচ্ছেন। বাড়িতে কৃষাণিরা ধান মাড়াই ও শুকানোর কাজ করছেন। দম ফেলার ফুরসত নেই কৃষক কৃষাণির।
লাকসাম পৌরসভার গোপালপুরের কৃষক বশির আহমেদ, বাকই গ্রামের মো.সাইফুল ইসলাম ও কৈত্রা গ্রামের আবুল খায়ের বলেন, কৃষি বিভাগের পরামর্শে প্রথমবারের মতো উইন ৩০২,৩০৫ জাতটি চাষ করেছেন। ধানটি চিকন। এটির বাম্পার ফলন পেয়েছেন। ভালো দাম পেয়ে তারা খুশি।
লাকসাম পৌর এলাকার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. আবদুল আউয়াল ও কৈত্রা বøকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা রিফাত জাহান বলেন,এখন মোটা ধানের দাম প্রতি মণ ৯৫০টাকা। সেখানে চিকন জাতের উইন ৩০২,৩০৫ মণ ২০০টাকা বেশি ১১৫০টাকায় বিক্রি করা যাচ্ছে।
লাকসাম পৌরসভার কাউন্সিলর অ্যাড. মাসুদ রানা বলেন, লাভ না পেলে কৃষকদের নতুন জাতের প্রতি আগ্রহ জন্মাবে না। হাইব্রিড নতুন জাতের ধান চাষ করে তারা ভালো ফলন পেয়েছেন বলে জেনেছি।
লাকসাম উপজেলা কৃষি অফিসার মো. আল-আমিন জানান, এ বছর এই উপজেলায় ৮হাজার ৭২৪ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। তার মধ্যে হাইব্রিড ৫হাজার ৪৯০ হেক্টর ও উফসী ৩হাজার ২৩৪ হেক্টর জমিতে। প্রণোদনার মাধ্যমে ৪হজার ৯০০জনকে হাইব্রিড ধানের বীজ ও ১হাজার ৭০০জনকে উফসী ধানের বীজ দেয়া হয়। তার মধ্যে হাইব্রিড ধানের আশানুরুপ ফলন হয়েছে। হাইব্রিড উইন ৩০২,৩০৫ জাতটি চিকন। যা রপ্তানিযোগ্য। পৌর এলাকা,বাকই দক্ষিণ,আজগরা,উত্তরদা ইউনিয়নসহ বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করে এর ভালো ফলন দেখা গেছে। হাইব্রিড ধানের ভালো ফলন পেয়ে খুশি কৃষক। আগামীতে জাতটি আরো বেশি কৃষক চাষ করবেন বলে আশা করা যাচ্ছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুমিল্লার উপপরিচালক আইউব মাহমুদ জানান, মৌসুমের শুরু থেকেই আধুনিক উফশী জাত ও হাইব্রিড জাতের বোরো ধান আবাদে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করেন মাঠ কর্মকর্তারা। নানা প্রতিকূলতার পরেও নিয়মিত মাঠ পরিদর্শন ও পরামর্শ প্রদানের মাধ্যমে এবছর হাইব্রিড ধানের ভালো ফলন হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/এএম