পাহাড়ি বিরল শুভ্রতা ও সুগন্ধিতে অনন্য কুরচি ফুল রংপুর অঞ্চলে সাধারণত দেখা যায় না। এই ফুলটির দেখা মিললো নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়ার জন্মভিটা সংলগ্ন রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার পায়রাবন্দের বেগম রোকেয়া স্মৃতিকেন্দ্রের অডিটোরিয়ামের দক্ষিণ-পশ্চিম কোণায়।
এই ফুল সিলেট, বান্দরবান, পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি এলাকায় জন্মালেও উত্তরাঞ্চলের সমতলে এই ফুলটি বিরল।
বাংলা একাডেমির পরিচালনাধীন বেগম রোকেয়া স্মৃতিকেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কৃষিবিদ আবিদ করিম মুন্না জানান, 'করোনাকালীন শিথিলতায় এই ফুলটির চারা রোপণ করা হয়। কুরচির কুটজ কিংবা গিরিমল্লিকা নামেও পরিচিতি আছে। শীতের শেষে সব পাতা ঝরে যায় ক্ষুদ্র বা মাঝারি আকারের এই বৃক্ষটির। ফুল ফোটার মৌসুম বসন্তের শেষভাগ থেকে গ্রীষ্মকাল। কোনো কোনো গাছে বর্ষা পর্যন্ত ফুল থাকে।'
সাদা পাঁচ পাপড়ির থোকায় ধরে কুরচি ফুল। কুরচির কাণ্ড সরল, বাকল অমসৃণ ও হালকা ধূসর রঙের। পাতা অনেকটা ডিম্বাকৃতির। সাদা সাদা ছোট ফুলে ফোটে। ভেষজগুণে ভরা এই ফুল। বৃক্ষটির ফুল, বাকল ও ফল থেকে তৈরি হয় আমাশয়ের ওষুধ। ফুল রক্তদোষ, পাতা বাত ও ক্রনিক ব্রঙ্কাইটিস, বীজ অর্শ্ব ও একজিমায় উপকারি। সর্প দংশন এবং বিছার কামড়েও বাকল ব্যবহার করার চলন রয়েছে। আসামে কুরচি কাঠের কবজ ব্যবহারের কথা শোনা যায়। নরম কাঠ থেকে তৈরি হয় খেলনা ও পুতুল। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে আকৃষ্ট করেছিল এই ফুল। রবীন্দ্রনাথ 'বনবাণী' কাব্যের 'কুরচি' কবিতায় লিখেছেন, 'সূর্যের আলোর ভাষা আমি কবি কিছু কিছু চিনি/কুরচি পড়েছ ধরা, তুমি রবির আদরিণী।’
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল