দাগনভূঞায় নদী কেড়ে নিল দুটি বসতঘর। যেকোন মুহূর্তে আরো ১৫টি বসতঘর বিলীনের পথে রয়েছে। নদীগর্ভে নিজেদের বাড়িঘর ভাঙতে দেখে আতঙ্কে দিনযাপন করছে পরিবারগুলো। এজন্য তারা দুষছেন অপরিকল্পিতভাবে ব্রিজ নির্মাণকে। দাগনভূঞার উপজেলার মাতুভূঞা ইউনিয়নের আশ্রাফপুরের বাসিন্দা বিবি জোহরা বলেন, মাত্র ৩ শতক জায়গায় নির্মিত বসতঘরটি কোনমতে সরাতে পেরেছেন। তাদের আরো কিছু ঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙন যখন বেশি হয়ে যায় তখন আমাদের কিছু ঘর উঠিয়ে অন্য জায়গায় সরিয়ে রাখি। এখন এই রোদ ও বৃষ্টির মধ্যে পরিবার নিয়ে কোথায় যাব কোথায় থাকবো? ব্রিজটি নির্মাণের পরিকল্পনা করা সময় তাদের এভাবে ব্রিজ নির্মাণ না করার জন্য অনুরোধ করেছিলাম। তারা আমার কথা শুনেনি। ব্রিজটির জন্য আমার সহায় সম্বল নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
স্থানীয়রা জানান, উপজেলার মাতুভূঞা ইউনিয়নের আশ্রাফপুর ও মোমারিজপুরের সংযোগের জন্য দীর্ঘ সময় পর কাঠের ব্রিজ সরিয়ে ব্রিজটি করা হচ্ছে। আর এ সময় কাজের জন্য ফাইলিং ও মাটি কাটায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আশ্রাফপুরে বাসিন্দারা। মোমারিজপুরের অংশেও কিছু ক্ষতি হয়েছে। সাম্প্রতিক বন্যায় নদী দিয়ে পানি নামায় নদীর পাশের ২টি ঘর ইতিমধ্যে নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। আরো প্রায় ১৫টি ঘরের বাসিন্দারা ঝুঁকিতে রয়েছে।
স্থানীয় বাসীন্দা ও দাগনভূঞা বাজারের ব্যবসায়ী মো. রাহাত বলেন, যেভাবে ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে তা অব্যাহত থাকলে পুরো এলাকা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। বাসিন্দা দিনমজুর মো. বেলাল জানান, এই ব্রিজটির কারণে আমরা বিপদগ্রস্ত। ব্রিজটি অন্য স্থানে করলে নদী এভাবে ভাঙতো না।
একই গ্রামের আবুল হোসেন বলেন, ব্রিজ করার পর পূর্ব ও পশ্চিম পাশের ঘরবাড়ি ভাঙছে। এর আগে আমরা কখনো ভাঙন দেখিনি। এই ব্রিজের কাজের পর থেকেই ভাঙন শুরু হয়েছে। কাজ শুরুর আগেই আমরা বলেছিলাম বিষয়গুলো কিন্তু আমাদের কথা শুনেনি।
এ বিষয়ে সাবেক ইউপি সদস্য হারিছ আহাম্মদ পেয়ার বলেন, এ ব্রিজটি করার সময়ই আমরা বলেছিলাম আরো দক্ষিণ দিকে করার জন্য কিন্তু তারা ওই পাশের একপক্ষের বাধার প্রেক্ষিতে উত্তর দিকে করেছে। যার জন্য এ ক্ষতির সম্মুখীন আমরা। এটি নিয়ে যদি দ্রুত কোন পদক্ষেপ প্রশাসন গ্রহণ না করে তাহলে আরো বড় বিপদে পড়তে হবে আমাদের।
দাগনভূঞা উপজেলার নির্বাহী অফিসার নিবেদিতা চাকমা জানান, এ বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিডি প্রতিদিন/এএ