ঋতু পরিক্রমায় পৌষ ও মাঘ মাসে পুরোপুরি শীতকালের দেখা মিললেও হেমন্তকাল তথা কার্তিক ও অগ্রহায়ণ মাস থেকেই শীতের আমেজ শুরু হয়ে যায়। ফলে কার্তিক মাস থেকেই শীতের জন্য প্রস্তুতি শুরু হয়। এরই মধ্যে কার্তিক মাসের শেষ পর্যায় রয়েছে। এই অবস্থায় এখনও পুরোপুরি ফ্যান ও এসির ব্যবহার বন্ধ না হলেও রাতের শেষ প্রহরে কিছুটা শীত অনুভব হয়।
দোকান মালিক ও কারিগরদের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রতি বছরই এই সময়টাতে লেপ-তোষকের দোকানে ভিড় বাড়তে থাকে। কিন্তু এ বছর এখনও তেমন ভিড় পরিলক্ষিত হচ্ছে না। নারায়ণগঞ্জের লেপ-তোষকের দোকানগুলোতে যেন ক্রেতার আকাল চলছে। দোকান মালিক ও কারিগরদের মুখে হাসি নেই। তারা দোকানে বসে অলস সময় পার করছেন।
যদিও গত কয়েক বছর ধরেই এই অবস্থা চলমান রয়েছে। এখন লেপ-তোষকের থেকে কদর বেড়েছে কম্বল-ম্যাট্রেসের। যার কারণে এখন আর আগের মতো লেপ-তোষক বিক্রি হয় না। তারপরেও প্রতি বছর এই সময়ে কিছু বেচা-কেনা হয়ে থাকে লেপ-তোষকের দোকানে। সেই সাথে কারিগরদেরও ব্যস্ততা বাড়ে। দেখা মিলে ক্রেতার। এ বছর যেন একদমই ফাঁকা যাচ্ছে।
এদিকে, তুলার মূল্য প্রতি বছরের মতো এবারও একই দাম রয়েছে। বাজারে প্রতি কেজি গার্মেন্টস তুলা ৪৫ টাকা, শিমুল তুলা ৩৫০ টাকা, কার্পাস তুলা ও শিশু তুলা ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। একই সাথে একটি লেপ তৈরি করতে ১৪০০ থেকে ১৫০০ টাকা খরচ হয়ে থাকে। তোষক তৈরি করতে ২ হাজার থেকে ৩ হাজার টাকা খরচ হয়ে থাকে।
শহরের শায়েস্তাখান সড়কের ইসহাক ট্রেডার্সের প্রোপ্রাইটর মো. ইসহাম মিয়া বলেন, আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য খুবই খারাপ যাচ্ছে। দুই তিনজন কারিগর ছিল তাদের বসে থাকতে হয়। কারিগরদের কোনো কাজ নেই। ব্যবসা মন্দা যাচ্ছে। সারাদিন চলে যায় একটি অর্ডার আসে না। একটিও লেপ কিংবা তোষক বিক্রি করতে পারি না।
বিক্রি না হওয়ার কারণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এখন আর আগের মতো শীত নেই। শীত বাড়লে বেচাকেনা বাড়ে। আরেকটি কারণ হচ্ছে এখন বিদেশি কম্বল বেচাকেনা হয়েছে। বিদেশি কম্বলের চাহিদা বেশি। যার কারণে লেপ-তোষক বেচাকেনা হয় না।
শায়েস্তাখান সড়কের লেপ-তোষক দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মো. জুবেদ খান বলেন, ব্যবসা-বাণিজ্য ভালো চলছে। বেচা-কেনা হয়ে থাকে। প্রতিদিন ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা বিক্রি হয়ে থাকে। আমি কম টাকায় জিনিসপত্র বিক্রি করে থাকি। তবে আগের মতো এখন বেচা-কেনা হয় না। যা বিক্রি হয়, তা দিয়ে কোনোরকম দিন চলে যায়।
বিডি প্রতিদিন/এমআই