বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে কক্সবাজার শহরের গুনগাছতলা এলাকায় সহিংসতার অভিযোগে কক্সবাজারে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের ৫২০ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামাসহ ৭৭০ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার আইনে আরও একটি মামলা হয়েছে। কক্সবাজার সদর মডেল থানায় দায়ের করা মামলার এজাহারে আওয়ামী লীগের জেলা, উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের ৫২০ নেতার নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
কক্সবাজার সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ইলিয়াস খান এই তথ্য নিশ্চিত করে জানান, শুক্রবার রাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম জেলার বাঁশখালী উপজেলার চাম্বল ইউনিয়নের ছাদেক ফকির পাড়ার নবী হোসেনের ছেলে, বর্তমানে কক্সবাজার সদর ঝিলংজা ইউনিয়নে বসবাসকারী এনামুল হক বাদী হয়ে দ্রুত বিচার আইনে মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, গত ৪ আগস্ট সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে ৮টা পর্যন্ত কক্সবাজার শহরের লালদিঘীর পাড়, শহীদ মিনার, গুনগাছতলা, হকশন ও আশেপাশের উপসড়কে জনমনে আতঙ্ক ও ত্রাস সৃষ্টি এবং হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা ও বোমা বিস্ফোরণ করা হয়। মামলায় আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট ফরিদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান, সাবেক সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল, আশেক উল্লাহ রফিক, জাফর আলম, আবদুর রহমান বদি, কক্সবাজার পৌরসভার সাবেক মেয়র মাহবুবুর রহমান চৌধুরী, জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমদ চৌধুরী ও শাহীনুল হক মার্শাল, কক্সবাজার পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি নজিবুল ইসলাম, কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এসএম সাদ্দাম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মারুফ আদনান, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ইশতিয়াক আহমদ জয়, সাবেক সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য এথিন রাখাইন, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক নাজনীন সরওয়ার কাবেরী, শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক উজ্জ্বল কর, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মুনাফ সিকদারসহ ৫২০ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
মামলায় নাম উল্লেখ থাকা সকলেই আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগ, জেলা, উপজেলা, পৌরসভা ও বিভিন্ন ওয়ার্ডের নেতাকর্মী। আসামির তালিকায় রয়েছে শহর জাসদের সভাপতি মোহাম্মদ হোসেন মাসুর নামও।
এজাহারে গণ-আন্দোলনে ৪ আগস্ট কক্সবাজার শহরের গুনগাছতলা ও আশেপাশের এলাকায় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের দ্বারা সহিংসতা, বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা, গুরুতর জখম, হত্যাচেষ্টা ও বিস্ফোরণের অভিযোগ আনা হয়েছে।
এ নিয়ে ৫ আগস্টের পর কক্সবাজার জেলার ৯ উপজেলায় ২২টি মামলা দায়ের করা হলো। জুলাই মাসে গণ-আন্দোলন চলাকালে কক্সবাজার শহরের ১৬ জুলাই থেকে ৪ আগস্ট পর্যন্ত আন্দোলনরত বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি বড় ধরনের হামলা হয়। এতে দুইজন নিহত ও গুলিবিদ্ধসহ বহু ছাত্র-জনতা আহত হন।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল