পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রীকে নির্যাতন করে মৌখিকভাবে ডিভোর্স দেওয়ার পর আট মাস বয়সী শিশুকন্যাকে ছিনিয়ে নিয়ে দেড় লাখ টাকায় বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বাবার বিরুদ্ধে। ঘটনার পর মা পপি বেগম সন্তানকে ফিরে পেতে থানায় অভিযোগ ও আদালতে মামলা করেন। আদালত শিশুটিকে খুঁজে দিতে পুলিশকে নির্দেশ দিলেও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছে পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার ফুলসূতি ইউনিয়নের রামপাশা গ্রামে।
জানা গেছে, তিন বছর আগে গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলার বোয়ালিয়া গ্রামের হান্নান সরদারের মেয়ে পপি বেগমের সঙ্গে পাশের নগরকান্দা উপজেলার ফুলসুতি ইউনিয়নের রামপাশা গ্রামের মানিক বিশ্বাসের ছেলে কাইয়ুম বিশ্বাসের সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিবাহ হয়। বিয়ের পর থেকে পারিবারিক কলহ লেগেই থাকত। এর মাঝে তাদের একটি মেয়েশিশুর জন্ম হয়। পরবর্তীকালে গত পাঁচ মাস আগে কলহের জের ধরে মৌখিক তালাক হয়।
কন্যা শিশুটির মা পপি বেগম জানান, তালাকের সময় তার কোল থেকে জোর করে কন্যা সন্তান তানহাকে নিয়ে রাখা হয়। পপির অভিযোগ, তার স্বামী কাইয়ুম বিশ্বাস তাদের মেয়ে তানহাকে নগরকান্দা উপজেলার শাখরাইল গ্রামের কোহিনুর বেগম নামে এক নারীর কাছে দেড় লাখ টাকায় বিক্রি করে দেন। এ ঘটনায় মধ্যস্থতাকারী হিসেবে ছিলেন দলিল লেখক আলমগীর তালুকদার।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে পপি বেগম বলেন, “আমি রাতদিন আমার বাচ্চার কথা ভেবে পাগলপ্রায়। যাকে বেচা হয়েছে, তার মায়ের পায়ে ধরে কেঁদেছি, কিন্তু আমার মেয়েকে এক নজর দেখতে দেয়নি। তারা বলেছে, আমরা টাকা দিয়ে কিনেছি, যে বিক্রি করেছে তার কাছেই যাও।”
পপি বেগম ফরিদপুরের বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় অভিযুক্ত করা হয়েছে স্বামী কাইয়ুম বিশ্বাস (৪০), তার তিন বোন মিতা আক্তার, বুলি বেগম, সাগরী আক্তারসহ মোট পাঁচজনকে। আদালত স্থানীয় থানাকে শিশুটির বিষয়ে আদালতে প্রতিবেদন দেবার কথা বলা হলেও শিশুটিকে খুঁজে পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এ বিষয়ে নগরকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মাদ সফর আলী জানান, “‘আদালত আমাদের কাছে প্রতিবেদন চেয়েছেন, সে অনুযায়ী কাজ চলছে। কিন্তু অভিযোগে বাচ্চাটি বিক্রির যে ঠিকানা দেওয়া হয়েছে, সেখানে শিশুটিকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। শিশুটিকে খুঁজে পেলে আদালতে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত কাইয়ুম বিশ্বাসের মোবাইল ফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
বিডি প্রতিদিন/নাজিম