আওয়ামী লীগ সরকার পতনের ৯ মাস পর ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের বাবাকে প্রধান আসামি করে জেলা বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে বোমা হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগে মামলা হয়েছে।
১৮ মে মাগুরা সদর থানায় ফৌজদারি কার্যবিধি ও বিস্ফোরক আইনের বিভিন্ন ধারায় মামলাটি করেন অফিসের কেয়ারটেকার আবু তাহের নামের এক ব্যক্তি।
মামলায় আসামি হিসেবে মাগুরা-১ আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের বাবা খন্দকার মাসরুর রেজা কুটিলসহ ৭৯ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা আসামি রয়েছেন আরও ১৫০ থেকে ২০০ জন।
মাগুরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আইয়ুব আলী মামলার তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ৪ আগস্টের ঘটনায় ওই মামলা হয়েছে। তবে এ মামলায় এখনো কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। তদন্ত চলছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আসামিরা পরস্পর সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসী। তারা সবাই আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা–কর্মী। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলার সময় ঘটনার দিন ৪ আগস্ট বেলা ৩টার দিকে হাতবোমা, পিস্তল, শটগান, বন্দুক, রামদা, ছ্যানদা, চাপাতি, চায়নিজ কুড়াল, লোহার রড, শাবল, ককটেল বোমা, প্লাস্টিকের টবভর্তি পেট্রোল নিয়ে মাগুরা শহরের ইসলামপুরপাড়ায় অবস্থিত বিএনপি কার্যালয়ে এসে হামলা চালান। আসামিরা অফিসকক্ষের ভেতরে থাকা চেয়ার, টেবিল, আলমারিসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র ভাঙচুর করেন। পরে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন।
অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, এ সময় কার্যালয়ের পশ্চিম পাশে অবস্থিত মাগুরা জেলা বিএনপির প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি প্রয়াত হাবিবুর রহমানের বসতবাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়।
মামলায় ১ নম্বর আসামি সাকিবের বাবা খন্দকার মাসরুর রেজা কুটিলের বিরুদ্ধে ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে বিএনপি কার্যালয় পুড়িয়ে দেওয়ার হুকুম দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে।
তিনি ছাড়াও এ মামলায় উল্লেখযোগ্য আসামিরা হচ্ছেন জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক ফজলুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাখারুল ইসলাম শাকিল, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মকবুল হাসান মাকুল, জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক শেখ রেজাউল ইসলাম, জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক সাকিব হাসান তুহিন প্রমুখ।
মামলার বাদী মো. আবু তাহের (৩১) মাগুরা সদর উপজেলার পাথরা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি নিজেকে বিএনপির একজন কর্মী এবং ওই কার্যালয়ের কেয়ারটেকার হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, ‘ঘটনার দিনও আমি পার্টি অফিসে ছিলাম। দলীয় নেতাদের সঙ্গে কথা বলে মামলা করতে দেরি হয়েছে। ঘটনার সময় যারা ছিলেন, তাদেরকেই আসামি করা হয়েছে।’
এ বিষয়ে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আলী আহম্মেদ জানান, ‘জেলা বিএনপির কার্যালয়ে যারা হামলা করেছিলেন, তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনতে হবে। তবে এর সঙ্গে জড়িত নন, এমন কাউকে আসামি করলে সেটা দুঃখজনক ব্যাপার।’
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত