নিম্নচাপের প্রভাবে উত্তাল বঙ্গোপসাগরের ঢেউয়ের তাণ্ডবে ভেঙে গেছে পর্যটন কেন্দ্র পটুয়াখালীর কুয়াকাটা নির্মাণাধীন মেরিন ড্রাইভ সড়ক। পাশাপাশি দমকা হাওয়ায় সমুদ্রতীরে গাছপালার ব্যাপক ক্ষতিসাধন হয়েছে। ভেঙে গেছে অর্ধশত কাঁচা ঘর-বাড়ি। এছাড়া ওয়াপদা বেড়িবাঁধের বাইরে শত শত ঘর-বাড়ি, দোকান-পাট জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে। মাছের ঘেরে পানি ঢুকে ভেসে গেছে কোটি টাকার বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। ক্ষতি হয়েছে বর্ষাকালীন সবজি ক্ষেত। নদ-নদীর পানি বৃদ্ধিতে নিম্নাঞ্চলের মানুষ অপেক্ষাকৃত উঁচু স্থানে নিরাপদ আশ্রয় নিয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে গোটা উপকূলজুড়ে থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। কখনও কখনও মৃদু দমকা বাতাস বইছে। ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) কলাপাড়ার সহকারী পরিচালক আসাদুজ্জামান খান জানান, তিন নম্বর সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যাওয়ার নির্দেশনা রয়েছে।
বিভিন্ন স্থান ঘুড়ে দেখা যায়, বঙ্গোপসাগরের সৃষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে কলাপাড়ায় পায়রা বন্দরসহ গোটা উপকূলীয় এলাকার নিম্নাঞ্চল অস্বাভাবিক জোয়ারের জলোচ্ছ্বাসে ভাসছে। অস্বাভাবিক জোয়ারের জলোচ্ছ্বাসে চরম দূরাবস্থায় পড়েছেন ওইসব এলাকার মানুষ। তাদের অনেকের বাড়ি-ঘরের উঠোন থেকে রান্নার চুলা পর্যন্ত ডুবে গেছে। উনুনে হাড়ি ওঠেনি বহু পরিবারের।
ধানখালীর পশ্চিম লোন্দা গ্রামের বাসিন্দার জানান, তাদের ওখানে ২৫০ পরিবারের বসবাস। নদী তীরের রিংবেড়িবাঁধ উপচে জোয়ারের পানিতে সব তলিয়ে গেছে। একই দশা চর গঙ্গামতি এলাকার। তবে রাতের জোয়ারে আবারও আরেক দফা ডুবে যাওয়ার শঙ্কায় আছেন এসব মানুষ। তাদের দাবি, আগের বছরগুলোতে এই সময় এমন অস্বাভাবিক জোয়ার দেখেননি।
আন্দারমানি নদী সংলগ্ন অধিবাসী গৌতম চন্দ্র হালাদার জানান, তার ঘরের ভিতর প্রায় তিন ফুট পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এতে আসবাবপত্র সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ভিজে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তাদের দুপুরের রান্না হয়নি।
কুয়াকাটা সি ট্যুরিজমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. জনি আলমগীর জানান, জোয়ারের সময় বঙ্গোপসাগরের উত্তাল ঢেউয়ের তাণ্ডবে কুয়াকাটার মেরিন ড্রাইভের অন্তত দুই কিলোমিটার সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া ব্যাপকভাবে ক্ষতি হয়েছে সমুদ্রতটের শতাধিক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের।
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রবিউল ইসলাম জানান, তিনি এ বিষয় খোঁজ-খবর নেওয়ার জন্য ইউপি চেয়ারম্যান ও প্রশাসকদেরকে নির্দেশনা দিয়েছেন।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত