ঝড়ের আঘাতে ভোলায় বিভিন্ন স্থানে বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। লালমোহন ও তজুমদ্দিন উপজেলায় বাঁধ ভেঙে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে কয়েক হাজার মানুষ। এছাড়া বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চলের অসংখ্য গরু-মহিষ-ভেড়া ভেসে গেছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
স্থানীয়রা জানায়, বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে শুরু হয় ঝড়ের তাণ্ডব। ওই সময় সদর উপজেলার শিবপুর মাছঘাট মেঘনার ভাঙনের কবলে পড়ে। মুহূর্তের মধ্যে একটি মাছের আড়ৎ নদীতে তলিয়ে যায়। এ সময় স্থানীয়রা দ্রুততার সাথে মাছঘাটের অন্যান্য ঘরগুলো সরিয়ে নেয়। সংবাদ পেয়ে ভোলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জিয়াউদ্দীন আরিফ এবং সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আরিফুজ্জামান বিকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলার নির্মাণাধীন রিংবাঁধ ও লালমোহন উপজেলার লর্ডহার্ডিঞ্জ ইউনিয়নে মেঘনার বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করে। এতে ১০ থেকে ১৫ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়ে।
মেঘনার মাঝের চরের মহিষের বাথানের মালিক আব্দুস সাত্তার জানান, অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে বাঁধের বাইরের এবং বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চলের কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। মদনপুর চরে কিল্লার উপর নিয়ে রাখা হয়েছিল মহিষ, গরু ও ভেড়া। হঠাৎ কিল্লার একাংশ মেঘনার ঢেউয়ের আঘাতে তলিয়ে যায়। আর তখন প্রায় ৫০টি মহিষ, ৩০টি গরু এবং ১০-১২টি ভেড়া ভেসে যায়। এছাড়াও ঢালচর, চরপাতিলাসহ বিভিন্ন চরের অসংখ্য গবাদি পশু ভেসে গেছে বলে শুনেছেন।
লালমোহন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল আজিজ জানান, বাঁধভাঙা পানিতে লর্ডহার্ডিঞ্জ এলাকার প্রায় ১০ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। এছাড়া রামগঞ্জ এলাকায় ১৩টি বসতঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। তিনি জানান, ক্ষতিগ্রস্তদের শুকনো খাবারসহ ত্রাণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান জানান, বৃহস্পতিবার বিকালে মেঘনার জোয়ার বিপদসীমার ১৩২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এ সময় ঢেউয়ের আঘাতে তজুমদ্দিন স্লুইসগেট এলাকায় নির্মাণাধীন রিংবাঁধের ১০ মিটার এলাকা ছুটে লোকালয়ে পানি ঢুকে যায়। এছাড়া লালমোহন উপজেলায় ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ সংস্কার করা হয়েছে।
শুক্রবার সকালে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা সরজমিন দেখতে গিয়ে জেলা প্রশাসক মো. আজাদ জাহান সাংবাদিকদের জানান, ক্ষয়ক্ষতির সঠিক পরিমাণ জানতে কিছুটা সময় লাগবে। প্রাথমিকভাবে জেলায় এক থেকে দেড় হাজার বাড়িঘর বিধ্বস্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তিনি বলেন, শুকনো খাবারসহ ত্রাণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পর্যাপ্ত ত্রাণের মজুত রয়েছে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল