চাঁদপুরের কচুয়ায় সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জের ধরে মাদ্রাসা ছাত্র মো. মিলন হোসেনকে (১২) শ্বাসরোধ ও পানিতে ডুবিয়ে হত্যার দায়ে শামিম হোসেন (২৮) ও সোহাগ হোসেন (২৮) নামে দুইজনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে আরেক আসামি মো. রাব্বি হোসেনকে (২৮) যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
মঙ্গলবার দুপুরে চাঁদপুর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজের (২) বিচারক সৈয়দ তাফাজ্জল হোসেন হিরু এ রায় প্রদান করেন।
হত্যার শিকার মিলন হোসেন কচুয়া কান্দিরপাড় গ্রামের প্রধানিয়া বাড়ির মো. তাজুল ইসলামের ছেলে। মিলন চাপাতলী মাদ্রাসায় ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র ছিল।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি শামিম হোসেন কান্দিরপাড় প্রধানিয়া বাড়ির মো. ইমাম হোসেন ও সোহাগ হোসেন পাড়াগাঁও গ্রামের নুর উদ্দিনের ছেলে। যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি রাব্বি হোসেন কান্দিরপাড় গ্রামের ফরাজি বাড়ির আবুল বাসারের ছেলে।
মামলার বিবরণে জানা যায়, হত্যার শিকার মিলনের বাবা তাজুল ইসলামের সাথে আসামির স্বজনদের সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ ছিল। ওই বিরোধের কারণে ঘটনার দিন ২০১৫ সালের ২৯ জুন দুপুরের দিকে মাদ্রাসা ছাত্র মিলন বাড়ি থেকে পাশে রহিমানগর বাজারে যায়। বাজার থেকে বাড়িতে না ফেরায় পরদিন ৩০ জুন কচুয়া থানায় তার ভাই রিপন হোসেন (২৫) নিখোঁজ ডায়েরি করেন।
এরপর ২ জুলাই স্থানীয়দের মাধ্যমে মিলনের পরিবার জানতে পারে সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জের ধরে আসামি শামিম, সোহাগ ও রাব্বি মিলনকে হত্যার উদ্দেশ্যে কান্দিরপাড় ইব্রাহিম খলিলের ক্ষেতে নিয়ে পানিতে ডুবিয়ে ও শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।
বাদী রিপন হোসেন জানান, আসামিদের নাম-পরিচয় জানার পর স্থানীয় লোকজন প্রথমে শামীমকে আটক করে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে বাকি দুই আসামি সোহাগ ও রাব্বির নাম পাওয়া যায়। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় তাদের আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। খবর পেয়ে পুলিশ ২ জুলাই ঘটনাস্থল থেকে মিলনের মরদেহ উদ্ধার ও আসামিদের থানা হেফাজতে নেন।
এ ঘটনায় ওইদিনই মিলনের বড় ভাই রিপন হোসেন বাদী হয়ে কচুয়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তৎকালীন কচুয়া থানার এসআই মো. ওয়াজেদ আলী ২০১৬ সালের ৮ জানুয়ারি আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
সরকার পক্ষের আইনজীবী অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, মামলাটি দীর্ঘ ১০ বছর চলাকালীন আদালত ২২ জনের স্বাক্ষ্য গ্রহণ করেন। আসামিরা অপরাধ স্বীকার ও মামলার নথি পর্যালোচনা শেষে বিচারক তাদের উপস্থিতিতে এই রায় প্রদান করেন।
বিডি প্রতিদিন/এমআই