কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে এক নৈশ্যপ্রহরীর মাথায় দুই দিক থেকে আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকিয়ে এবং পরে হাত ও পা বেঁধে একটি ট্রাক্টরের ইঞ্জিনের অংশ ও একটি ব্যাটারি ডাকাতির ঘটনায় দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রবিবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।
আসামিরা হলেন-উপজেলার শিলাইদহ ইউনিয়নের জুরালপুর গ্রামের মানিকের ছেলে মো. রমজান (১৯) ও নন্দলালপুর ইউনিয়নের বুজরুক বাঁখই গ্রামের ওয়াহিদুজ্জামানের ছেলে মামুন হোসেন (৩৫)।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২৪ জুলাই রাত দুইটার দিকে উপজেলার শিলাইদহ ইউনিয়নের খোরশেদপুর এসবিসি ইটভাটায় হানা দেয় ৮-১০ জন ডাকাত। তাদের কারও হাতে আগ্নেয়াস্ত্র ও কারো মুখ বাঁধা ছিল কাপড় দিয়ে। ডাকাতরা ভাটায় ঢুকে প্রথমে নৈশপ্রহরী লেন্টু শেখের (৫৫) মাথার দুইদিক থেকে দুইজন আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকিয়ে মুঠোফোন ছিনিয়ে নেয়।
এরপর কয়েকজন মিলে তার হাত বেঁধে মাঠের ভেতরে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে তার পা বেঁধে মাটিতে শুইয়ে রেখে মুঠোফোনটি ইটের গাদায় রাখে এবং ইটভাটার একটি ট্রাক্টর গাড়ির ইঞ্জিনসহ মাথার অংশ এবং অন্য একটি ট্রাক্টরের ব্যাটারি খুলে নিয়ে দ্রুত চলে যায়। ট্রাক্টরের ইঞ্জিন ও ব্যাটারির বাজার মূল্য প্রায় ১৬ লাখ ১২ হাজার টাকা।
আরও জানা গেছে, এ ঘটনায় ২৫ জুলাই ইটভাটার মালিক খোন্দকার সাজ্জাদুল হক বাদী হয়ে অজ্ঞাত ৭-৮ জনকে আসামি করে কুমারখালী থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় সন্দেহজনকভাবে গত শনিবার দুপুরে নিজবাড়ি থেকে প্রথমে রমজানকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে আরেক আসামি মামুনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর তাদের দেওয়া তথ্যমতে ওইদিন রাতে পাবনা থেকে ডাকাতির মাল ট্রাক্টরের ইঞ্জিন ও ব্যাটারি জব্দ করে পুলিশ।
এসবিসি ভাটার নৈশপ্রহরী লেন্টু শেখ বলেন, সেদিন রাত দুইটার দিকে বড় বড় পিস্তলসহ ৮-১০ জন ডাকাত ভাটায় আসে। তারা প্রথমে একটা থাপ্পড় দিয়ে আমার মাথার দুই দিক থেকে দুইজন দুইটি অস্ত্র ঠেকিয়ে ফোন কেড়ে নেয়। এরপর আমার দুই হাত কাঁচা পাটের অংশ দিয়ে বেঁধে মাঠের ভেতরে (ভাটার এক কোনায়) নিয়ে গিয়ে দুই পাও বেঁধে ফেলেন। এরপর আমাকে ইটের গাদির কাছে শুইয়ে এবং ফোনটি ইটের গাদির উপরে দ্রুত ট্রাক্টরের মাথার অংশ ও ব্যাটারি নিয়ে চলে যায়।
তিনি আরও বলেন, ডাকাতরা আমাকে ফেলে চলে যাওয়ার পর ঝুম বৃষ্টি নামে। প্রায় আধাঘণ্টা চেষ্টার পর হাতের বাঁধা খুলতে পারি। পরে ম্যানেজারকে ফোন করি।
ইটভাটার ম্যানেজার আইয়ুব আলী বলেন, রাত ২টা ৪১ মিনিটে নৈশপ্রহরীর ফোন পেয়ে ছুটে এসে দেখি একটি ট্রাক্টরের ইঞ্জিনসহ মাথার অংশ এবং অপরটির ব্যাটারি নেই। সুষ্ঠু বিচারের আশায় মালিক থানায় মামলা করেছেন।
গ্রেফতার ব্যক্তিরা ডাকাতির কথা স্বীকার করেছে। তারা ঘটনায় জড়িত পাঁচজনের নামও বলেছেন বলে জানিয়েছেন কুমারখালী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আমিরুল ইসলাম।
তিনি বলেন, নৈশপ্রহরীর মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে ও হাত-পা বেঁধে ডাকাতির ঘটনায় দুইজনকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আসামিদের দেওয়া তথ্যমতে ডাকাতির মাল জব্দ করা হয়েছে। অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই