ভোলায় ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার শতাধিক পরিবার এখনো খোলা আকাশের নিচে চরম দুর্ভোগে রয়েছে। ক্ষতি হয়েছে অর্ধলক্ষ হেক্টর জমির আমন ধানসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষেত। তবে প্রশাসনের প্রাথমিক তালিকা অনুযায়ী ক্ষতিগ্রস্ত ৬৫ পরিবারকে ঘর সংস্কারের জন্য টিন এবং নগদ টাকা দেয়ার সহায়তার আশ্বাস দেয়া হয়েছে।
এদিকে রবিবার দুপুরে ভোলার ইলিশা নদীতে ডুবে যাওয়া ট্রলারের নিখোঁজ জেলে খোরশেদের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সোমবার বিকাল পর্যন্ত নিখোঁজ অপর ১৩ জেলের সন্ধ্যান পাওয়া যায়নি বলে নিশ্চিত করেছেন ভোলা থানার ওসি এনায়েত হোসেন।
ঘুর্ণিঝড় বুলবুলের প্রভাবে ভোলা জেলার মধ্যে সবচাইতে বেশি ক্ষতি হয়েছে চরফ্যাসন ও লালমোহন উপজেলায়। চরফ্যাসন উপজেলার চরমঙ্গল গ্রামে এখনো বহু পরিবার খোলা আকাশের নিচে চরম দুর্ভোগে দিন কাটাচ্ছে। ঘুর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে পরিবারগুলোর আসবাবপত্র জামা কাপোর খাবারসহ কিছুই নষ্ট হয়ে গেছে। এই এলাকায় ৩৭টি ঘর সম্পূণ বিধ্বস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো জানায়, এ পর্যন্ত তারা ২০ কেজি করে চাল এবং কিছু মুড়ি ছাড়া আর কিছুই পাননি।
অপরদিকে মাছ বিক্রি করে চাঁদপুর থেকে চরফ্যাশন যাওয়ার পথে রবিবার দুপুরে ভোলার রাজাপুর ইউনিয়নের জনতা বাজার এলাকার ইলিশা নদীতে ২৪ জেলেসহ আম্মাজান-২ নামের একটি মাছ ধরার ট্রলার ডুবে যায়। ওই সময় ১০ জেলে জীবিত উদ্ধার হয়। কোস্টগার্ড রবিবার রাতেই মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার মেঘনা নদী থেকে ডুবে যাওয়া ট্রলারটিসহ খোরশেদ নামে এক জেলের মৃতদেহ উদ্ধার করে। কিন্তু অন্য জেলেদের এখনো কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি। সোমবারও কোস্টগার্ডের একটি টিম নিখোঁজ জেলেদের উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছিল।
চরফ্যাশন থানার ওসি আরেফিন সিদ্দিক সাংবাদিকদের জানান, নিখোঁজ জেলেরা হচ্ছেন মো: কবির (৩০), রফিক বিশ্বাস (৪০), হাসান মোল্লা(৩৫), কামাল (৩০), মফিজ (৩০), আব্বাস মুন্সি (৪০), বেলাল (২৮), নরুল ইসলাম নজু (২৫), নবী (২৬), নাসিম (৪০), নাসিম (৪৫), জসিম (৩৫) ও হেজু (৩৫)। এদের সকলের বাড়ি চরফ্যাশন উপজেলার বিভিন্ন এলাকায়।
ভোলার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাসুদ আলম সিদ্দিক জানান, প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতি নির্ণয়ের জন্য তারা তালিকা প্রস্তুতের কাজ চলছে।প্রাথমিকভাবে ৬৫টি ঘর ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিটি পরিবারকে ২ বান্ডিল টিন এবং ৬ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। দুই একদিনের মধ্যেই তা বিতরণ করা হবে।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার