বিশ্বজুড়ে শুল্ক অস্থিরতা ও বাণিজ্যিক উত্তেজনার মাঝেও বাংলাদেশ তৈরি পোশাক রফতানিতে তার অবস্থান বজায় রাখছে। এর মাঝেও দিন দিন ডেনিমের চাহিদা বাড়ছে। এই প্রতিকূল সময়ে শিল্পের টেকসই উন্নয়ন ও উদ্ভাবনকে ভবিষ্যতের প্রধান ভিত্তি হিসেবে দেখছেন শিল্প উদ্যোক্তারা।
আজ রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবিতে) শুরু হওয়া বাংলাদেশ ডেনিম এক্সপোতে ১৮তম আসরে অংশগ্রহণকারী উদ্যোক্তারা এসব কথা বলেন। দুই দিনব্যাপী এই আয়োজনে বিশ্বের ১৩টি দেশের ৫৭টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে। অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে- বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, চীন, তুরস্ক, স্পেন, ইতালি, ভিয়েতনাম, সংযুক্ত আরব আমিরাত, জার্মানি, সুইজারল্যান্ড এবং যুক্তরাষ্ট্র।
ডেনিম প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের উদ্ভাবিত ও উৎপাদিত বস্ত্র, তৈরি পোশাক, সুতা, যন্ত্র, উৎপাদনে ব্যবহৃত সরঞ্জাম ও উপকরণ প্রদর্শন করছে। এতে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের ডেনিমপ্রেমী, উৎপাদনকারী, ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, ফ্যাশন ডিজাইনার, ডেনিম শিল্পের টেকসই ব্যবস্থার নিয়ে কাজ করেন, এমন বিশেষজ্ঞরা আসছেন। প্রদর্শনীর পাশাপাশি শিক্ষামূলক কর্মশালা ও প্রযুক্তিনির্ভর সেমিনার হয়।
বাংলাদেশ ডেনিম এক্সপোর প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী মোস্তাফিজ উদ্দিন বলেন, “২০২৫ সালের প্রথম প্রান্তিকে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রফতানিতে ২৬ দশমিক ৬৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে, যা আমাদের প্রতিযোগী দেশগুলোর তুলনায় বেশি। একই সময়ে ভারতের প্রবৃদ্ধি ২৪ দশমিক ০৪ শতাংশ, পাকিস্তানের ১৭ দশমিক ৪৯ শতাংশ, ভিয়েতনামের ১৩ দশমিক ৯৬ শতাংশ এবং চীনের ৪ দশমিক ১৮ শতাংশ। আমাদের এ প্রবৃদ্ধি এমন এক সময় যখন ট্রাম্প প্রশাসন বৈশ্বিকভাবে উচ্চ শুল্ক আরোপ করেছে। অর্থাৎ অস্থির আন্তর্জাতিক বাজার ও শুল্ক নীতির মাঝেও বাংলাদেশ তার প্রতিযোগিতামূলক অবস্থান বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছে। আমার মতে, বাণিজ্য আলোচনার টেবিলে আমাদের শক্তি হবে আমাদের শিল্পের দক্ষতা উন্নয়ন, স্থায়িত্ব ও উদ্ভাবনে অগ্রগতি। কারণ আমাদের যেমন বাণিজ্য অংশীদারদের প্রয়োজন, তেমনি তাদের ভোক্তারাদেরও আমাদের প্রয়োজন।”
মোস্তাফিজ উদ্দিন বলেন, “গত ডেনিম এক্সপোতে এলডিসি উত্তরণ নিয়ে প্যানেল আলোচনায় অংশগ্রহণকারীরা শিল্পের সক্ষমতা বৃদ্ধির ওপর জোর দিয়েছিলেন। সেই ধারাবাহিকতায় এবারের এক্সপোতে সকল আলোচনা দক্ষতা, উদ্ভাবন ও প্রস্তুতির বিষয়টি মাথায় রেখে আয়োজন করা হয়েছে। এবারের আয়োজনের মূল বার্তা হলো পরিকল্পনা থেকে বাস্তবায়নের দিকে অগ্রসর হওয়া, যার মাধ্যমে ২০২৯ এবং পরবর্তী সময়ের জন্য শিল্পকে প্রস্তুত করা হবে।”
দুই দিনব্যাপী এই আয়োজনে অনুষ্ঠিত দুটি গুরুত্বপূর্ণ প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ওয়াশিং প্রক্রিয়ার দৃষ্টিকোণ থেকে বাংলাদেশের ডেনিম শিল্পের অগ্রগতি ও বাংলাদেশি ডেনিম ট্রেসেবিলিটির প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এবারের এক্সপোর আকর্ষণীয় অংশ হিসেবে রয়েছে একটি ‘ফ্যাশন ট্রেন্ড জোন’। যেখানে বাংলাদেশে উদ্ভাবিত উন্নতমানের ডেনিম ও বিশেষ কাপড় প্রদর্শন করা হচ্ছে। যা দেশের প্রযুক্তিগত সক্ষমতার একটি উদাহরণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত