বৃহস্পতিবার, ৩ জুন, ২০২১ ০০:০০ টা

ঢাকা ও চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা

সরকার ও তিন মেয়রকে উদ্যোগী হতে হবে

অপরিকল্পিত নগরায়ণে ভারি বৃষ্টি হলেই রাজধানী ঢাকা পরিণত হয় জলজটের নগরীতে। চট্টগ্রামের অবস্থাও অভিন্ন। অপর্যাপ্ত ড্রেনেজব্যবস্থা ও পানি নিষ্কাশনের অভাবে দুই মেগা সিটিতে ভারি বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা নিয়তির লিখন হয়ে দাঁড়ায়। মঙ্গলবার বৃষ্টিপাতে রাজধানী ও চট্টগ্রামের নিচু এলাকাগুলো পানিতে সয়লাব হয়ে যায়। দুই মহানগরীর প্রায় সব রাস্তা পিচের তৈরি হওয়ায় এর একাংশ জলাবদ্ধতায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ঢাকা ও চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা সমস্যার সমাধানে বিভিন্ন কর্তৃপক্ষ একের পর এক পরিকল্পনা নিলেও তাতে সুফল মিলছে না। রাজধানীর জলাবদ্ধতা কমাতে নিষ্কাশনব্যবস্থার উন্নয়ন, সম্প্রসারণ, খাল সংস্কার, নর্দমা ও বক্স কালভার্ট পরিষ্কারের কাজে শত শত কোটি টাকা ব্যয়ের পরও পরিস্থিতির গুণগত পরিবর্তন নেই। চট্টগ্রামের সমস্যা আরও প্রকট। জলাবদ্ধতা অচলাবস্থা সৃষ্টি করছে বন্দরনগরে। প্রাকৃতিক খালগুলো বেদখল হয়ে যাওয়া এবং নগরায়ণের ক্ষেত্রে যে অব্যবস্থাপনার ছাপ রয়েছে তার খেসারত দিতে হচ্ছে দুই মহানগরবাসীকে। অপর্যাপ্ত ড্রেনেজব্যবস্থা জলাবদ্ধতার অন্যতম কারণ। রাজধানীর পানি নিষ্কাশনের জন্য ব্যবহৃত হতো বেশ কিছু প্রাকৃতিক খাল। এসবের সিংহভাগই ভরাট হয়ে যাওয়ায় জলাবদ্ধতা অনিবার্য হয়ে উঠেছে। অদ্ভুত এ দেশে খাল এমনকি নদীও বেদখল হয়ে যায়। যারা জনগণের ট্যাক্সের টাকায় পরিচালিত হন সরকারের ভূমি দফতরের সেই অসৎ কর্মকর্তা-কর্মচারীর যোগসাজশে একশ্রেণির লুটেরা তা আত্মসাতের কৃতিত্ব দেখাচ্ছে। ফলে বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতা দেখা দেয় রাজধানীতে। চট্টগ্রামের দুঃখ হয়ে বিরাজ করছে বিভিন্ন খাল ভরাটের ঘটনা। এসব খাল সংস্কারের অভাবে বর্ষা মৌসুমে অচলাবস্থা দেখা দেয় নগরজীবনে। নাগরিকদের ভোগান্তির সৃষ্টি হয়। আমাদের মতে, রাজধানী ঢাকা ও চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনে সরকার ও তিন সিটি করপোরেশনকে দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ ভূমিকা গ্রহণ করতে হবে। সিটি নির্বাচনের আগে নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতে ঢাকা ও চট্টগ্রামের তিন মেয়র জলাবদ্ধতা সমস্যার সমাধানে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তার বাস্তবায়নে উদ্যোগী হতে হবে। ভরাট খালগুলো পুনর্দখলের উদ্যোগ নিতে হবে জরুরি ভিত্তিতে। ড্রেনেজব্যবস্থার উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ ঘটিয়ে দ্রুত পানি নিষ্কাশন নিশ্চিত করা দরকার।

সর্বশেষ খবর