ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন নিয়ে উৎকণ্ঠা কমছে না। নির্বাচন কমিশনসহ দায়িত্বশীলদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল সহিংসতামুক্ত নির্বাচন অনুষ্ঠানে তারা সম্ভাব্য সবকিছুই করবেন। কিন্তু বাস্তবতা হলো নির্বাচনী হানাহানিতে বরং নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে। রবিবার প্রাণ হারিয়েছেন একজন বিজিবি সদস্যসহ ১১ জন। জাল ভোট, ব্যালট ছিনতাই ও বর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে তৃতীয় ধাপে ৯৮৬টি ইউনিয়ন পরিষদ ও অষ্টম ধাপের ৯টি পৌরসভা নির্বাচন। কেন্দ্র দখল, ব্যালট পেপার ছিনতাই ও প্রকাশ্যে সিল মারার ঘটনা ঘটেছে নীলফামারী, লক্ষ্মীপুর, কুমিল্লা, নেত্রকোনা, সাতক্ষীরা, ফেনীসহ কিছু এলাকায়। ভোট কেন্দ্র দখলসহ নানা অনিয়মের কারণে ২১ কেন্দ্রে ভোট স্থগিত করা হয়েছে। নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে বিজিবি সদস্য, লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে ছাত্রলীগ নেতা, নরসিংদীতে তিনজন, মুন্সীগঞ্জে দুজন, ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে দুজন নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া ভোটের আগের রাতে সহিংসতায় আহত দুজনের মৃত্যু হয়েছে। নির্বাচনী সহিংসতায় প্রথম ধাপের ভোটে প্রাণ হারিয়েছিলেন পাঁচজন। দ্বিতীয় ধাপের ভোটের দিন মারা গেছেন সাতজন। তৃতীয় ধাপের ভোটে নিহত হলেন ১১ জন। তিন ধাপের ভোটের আগে-পরে মিলে মোট প্রাণহানি ঘটেছে ৬৫ জনের। তৃতীয় ধাপের ব্যাপক সহিংসতা নির্বাচনী সৌন্দর্য অনেকটাই কেড়ে নিয়েছে। অনেকেরই ধারণা, দলীয় ভিত্তিতে মনোনয়ন ও দলীয় প্রতীক নিয়ে স্থানীয় নির্বাচন করায় হানাহানি ঘটছে। এটি সর্বাংশে সঠিক না হলেও অনেকাংশে সত্যি। দুনিয়ার অগ্রসর গণতান্ত্রিক দেশগুলোয় দলীয়ভাবে নির্বাচনের সুযোগ থাকলেও গণতন্ত্রচর্চার বিচারে আমরা অগ্রসর দেশগুলোর চেয়ে পিছিয়ে। এ সত্যি মনে রেখে স্থানীয় নির্বাচনে সমাজের সুশিক্ষিত ব্যক্তিদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে অরাজনৈতিক স্থানীয় সরকার নির্বাচনের পথে ফিরে যাওয়ার কথা ভাবতে হবে।