স্বৈরাচার পতনের মাস পুরলেও, নানা ছদ্মাবরণে তার সমর্থকদের কূটকৌশল থেমে নেই। তারা থেকে থেকে সংখ্যালঘু, আনসার, চিকিৎসক বা শ্রমিক লেবাসের আড়ালে জট পাকিয়ে এক এক ক্ষেত্রে অচলাবস্থা সৃষ্টির পাঁয়তারা চালিয়ে যাচ্ছে। ক্ষমতা গ্রহণের পরপরই অন্তর্বর্তী সরকারকে ভয়ংকর এক হঠাৎ বন্যা মোকাবিলা করতে হলো। এসবের মধ্যেই চলছে রাষ্ট্র সংস্কারের বিশাল কর্মযজ্ঞ; দেশবাসী যে গুরুদায়িত্ব তাদের ওপর অর্পণ করেছে। সমাজ ও রাষ্ট্রের সব ক্ষেত্রে জমে থাকা অনিয়ম-অনাচার, দুর্নীতি-দুঃশাসন, অন্যায্যতার বর্জ্য অপসারণ করতে হচ্ছে। আশাব্যঞ্জক এটাই যে, রাষ্ট্র পরিচালনায় হার্ডলাইন বেছে নিয়েছে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার। মানবিক রাষ্ট্র গঠনের লক্ষ্যে রাজনৈতিক সংস্কারের সঙ্গে আইন, বিচার ও নির্বাহী বিভাগ সংস্কার কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। ব্যক্তি থেকে প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতির মূলোৎপাটনের পদক্ষেপ নিয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নেওয়া হয়েছে জিরো টলারেন্স নীতি। সত্যিকার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রবর্তনে নির্বাচন কমিশনসহ সাংবিধানিক সংস্থগুলো ঢেলে সাজানো হচ্ছে। ব্যবসা-বাণিজ্য স্থিতিশীল করা ও শিল্পকারখানার উৎপাদন নির্বিঘ্ন রাখার স্বার্থে নিরাপত্তা নিশ্চিতে বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে, যেন ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিরা আশ্বস্ত হতে পারেন। এ ছাড়াও রয়েছে আর্থিক খাতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠা। ব্যাংক লুটপাট বন্ধ করা হয়েছে। পাচার করা টাকা ফেরতের প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে। এ সবকিছুর ভিতর দিয়ে বিশ্বমঞ্চে দেশের ভাবমূর্তি সমুজ্জ্বল করা সরকারের লক্ষ্য। এ বার্তা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট সব ক্ষেত্রে। সচিবদের বলা হয়েছে, অর্থের সর্বোত্তম ব্যবহার করতে; অনিয়মে শাস্তি। অব্যাহত উৎপাদনের স্বার্থে শ্রমিক অসন্তোষ নিরসনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে উপদেষ্টাদের পক্ষ থেকে। কোথাও কোনো মতলবি কলকাঠি নাড়ার প্রমাণ পাওয়া গেলে কঠোর হাতে দমনের ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। সার্বিক সুষ্ঠুতার স্বার্থে, দুষ্টের দমনে হয়তো এ মুহূর্তে এর কোনো বিকল্প নেই।