শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০১৯ ০০:০০ টা

সাংবাদিকদের অবাঞ্ছিত ঘোষণা দুঃখ প্রকাশ শমীর

নিজস্ব প্রতিবেদক

সাংবাদিকদের অবাঞ্ছিত ঘোষণা দুঃখ প্রকাশ শমীর

মোবাইল ফোন হারানোর সূত্র ধরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আপত্তিকর আচরণ করায় অভিনেত্রী এবং ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) প্রেসিডেন্ট শমী কায়সারকে অবিলম্বে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সাংবাদিক সংগঠনগুলো। এ ঘটনায় সমালোচনা করে বিবৃতি দিয়েছে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে), ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) ও ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ)। ক্ষমা না চাইলে শমী কায়সারের সংবাদ বর্জন করা হবে বলেও জানিয়েছেন সাংবাদিক নেতারা। একইসঙ্গে ধৃষ্টতাপূর্ণ আচরণ করায় অভিনেত্রী শমী কায়সারকে সব ধরনের গণমাধ্যমে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে বিএফইউজে ও ডিইউজের অপর একটি অংশ।

এদিকে গতকাল এক বিবৃতিতে শমী কায়সার পুরো ঘটনাটিকে অনাকাক্সিক্ষত ও অনিচ্ছাকৃত বলে দুঃখ প্রকাশ করেন।

শহীদ সাংবাদিকের সন্তান হয়েও সাংবাদিকদের সঙ্গে এমন দুর্ব্যবহারের কঠোর সমালোচনা করে গতকাল যৌথ বিবৃতি দেয় বিএফইউজে ও ডিইউজে। বিএফইউজে সভাপতি মোল্লা জালাল, মহাসচিব শাবান মাহমুদ, ডিইউজে সভাপতি আবু জাফর সূর্য ও সাধারণ সম্পাদক সোহেল হায়দার চৌধুরী স্বাক্ষরিত যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, ‘একজন শহীদ সাংবাদিকের মেয়ে হয়ে পিতার পেশার উত্তরসূরিদের ‘চোর’ বলে সম্বোধন করে শমী কায়সার প্রকান্তরে তার পিতাকেই অসম্মান করেছেন। শুধু তাই নয়, একজন সেলিব্রেটি হিসেবে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে ‘মোবাইল ফোন হারানোর’ সূত্র ধরে যে আচরণ করেছেন তা সেলিব্রেটিদের প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। তার মতো একজন অভিনেত্রী ও ব্যবসায়ীর কাছ থেকে এ ধরনের আচরণ অত্যন্ত গর্হিত ও নিন্দনীয়।’

বিবৃতিতে বিএফইউজে ও ডিইউজে নেতারা এ ধরনের নিকৃষ্টতম দুর্ব্যবহারের জন্য সাংবাদিক সমাজের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনার আহ্বান জানিয়ে বলেন, তার সংবাদ বর্জন করা হবে। প্রয়োজন হলে তার সম্পর্কে বিস্তারিত খোঁজখবর নিয়ে সাংবাদিক সমাজ নিয়মিত সংবাদ পরিবেশন করে জাতিকে বিস্তারিত জানাতে বাধ্য হবে।

এদিকে গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) অপর একটি অংশ সাংবাদিকদের সঙ্গে ধৃষ্টতাপূর্ণ আচরণ ও কটূক্তি করায় অভিনেত্রী শমী কায়সারকে সব ধরনের গণমাধ্যমে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে। সেইসঙ্গে তারা আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে শমী কায়সারকে ক্ষমা চাওয়ার আলটিমেটাম দেন।

এদিকে ডিআরইউ গতকাল শমী কায়সারকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ার আলটিমেটাম দিয়ে এক বিবৃতি দিয়েছে। বিবৃতিতে ডিআরইউ সভাপতি ইলিয়াস হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক কবির আহমেদ খান বলেন, তার মতো একজন অভিনেত্রী, ব্যবসায়ী ও শহীদ সাংবাদিকের সন্তানের এ ধরনের আচরণ অত্যন্ত গর্হিত ও নিন্দনীয়। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সাংবাদিক সমাজের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা না চাইলে সাংবাদিক সমাজ তাকে বয়কট করবে।

 

যা বললেন শমী

এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে শমী কায়সার এক বিবৃতিতে জানান, এটা আসলেই অনিচ্ছাকৃত এবং অনাকাক্সিক্ষত। অনুষ্ঠানে বক্তব্য শেষ করে কেক কাটার সময়ই হঠাৎ দেখি, আমার স্মার্টফোন দুটি পাওয়া যাচ্ছে না। তবে ফোন দুটিতে কল দিয়ে তখনও সচল পাচ্ছিলাম। আসলে মুঠোফোন আমাদের সবার জন্যই খুব গুরুত্বপূর্ণ। অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য থাকে সেখানে। আয়োজকরা ঘটনা জানার সঙ্গে সঙ্গে মিলনায়তনের মূল প্রবেশদ্বারবন্ধ করে দেয়। একই সঙ্গে উপস্থিত সাংবাদিক ভাইয়েরা সহযোগিতার মনোভাবে দেহতল্লাশি করার অনুমতি নিয়ে এগিয়ে আসেন। পরে সাংবাদিকদের ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, অনুষ্ঠানে কেক নিয়ে আসা লাইটিংয়ের এক কর্মী স্মার্টফোন দুটি নিয়ে গেছে। তা এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সে মূলত অসাধু কারণে এখানে এসেছিল এবং সে এর আগেও প্রেস ক্লাবে ও শিল্পকলায় এইরূপ জঘন্য কাজ করেছে। প্রেস ক্লাব আমার নিজের জায়গা বলেই আমি দাবি অনুভব করি। আয়োজকরা এবং উপস্থিত সবাই আমার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন। আমি স্বাভাবিকভাবেই খুব আপসেট ছিলাম, কিন্তু আমি এমন কোনো অসম্মানজনক বক্তব্য দেইনি এবং আমি একজন দেশবরেণ্য সাংবাদিকের সন্তান হিসেবে তাৎক্ষণিক দাঁড়িয়ে পুরো ঘটনাটির জন্য সব উপস্থিত সাংবাদিক ভাইদের প্রতি ‘দুঃখ প্রকাশ’ করি।’

সর্বশেষ খবর