বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা
ইন্টারভিউ → মৌসুমী

চলচ্চিত্র নির্মাণে গল্প নয় অভাব রুচির

চলচ্চিত্র নির্মাণে গল্প নয় অভাব রুচির

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেত্রী-নির্মাতা মৌসুমী আবার নির্মাণ আর অভিনয় নিয়ে বড় পর্দায় ফিরছেন। শিগগিরই এসব কাজ শুরু করবেন তিনি। বর্তমান ব্যস্ততা ও নানা বিষয়ে তার বলা কথা তুলে ধরেছেন- আলাউদ্দীন মাজিদ

 

কেমন আছেন?

আলহামদুলিল্লাহ, সৃষ্টিকর্তা খুব ভালো রেখেছেন। তাঁর প্রতি শোকরিয়া জানাই।

 

চলচ্চিত্র জীবনের কথা শুনতে চাই।

‘অর্জন ৭১’ শিরোনামের একটি ছবিতে কাজ করতে যাচ্ছি। শিগগিরই শুটিং শুরু হবে। এছাড়া নিজের প্রোডাকশন থেকে ছবি ও নাটক নির্মাণের প্রাথমিক পর্যায়ের কাজ চলছে। এগুলোও দ্রুত শুরু করতে চাই।

 

অর্জন ৭১ মানে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক গল্পের ছবি, এ ছবিতে গল্প নাকি চরিত্রের জন্য অভিনয়?

অবশ্যই গল্প ভালো, এমন বিষয়ের সঙ্গে থাকা মানে ঐতিহাসিক একটি গর্বের দলিলের সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়া। এতে রূপায়িত চরিত্রটি কালের সাক্ষী হয়ে থাকবে। তাই এমন কাজ করতে পারলে নিজেকে গর্বিত মনে করি বলেই ছবিটিতে অভিনয় করতে যাচ্ছি।

 

নিজের ছবি নির্মাণ ও নাটক সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানাবেন?

না, এই মুহূর্তে এ নিয়ে বিস্তারিত কিছু বলতে চাই না। চমক হিসেবেই রাখতে চাই। সময় হলে ঘটা করে সবাইকে জানাব।

 

ছবি নির্মাণ কমেছে, কিন্তু কেন?

এর অনেক কারণ রয়েছে। যেমন- অনেকে ছবি নির্মাণ করে দর্শক আর সিনেমা হলের অভাবে লগ্নিকৃত অর্থ ফেরত আনতে পারছেন না। অনেকে আবার দর্শক রুচি মানে তারা কোন ধরনের ছবি চায় তা বুঝতে পারছেন না। দর্শকের রুচিকে প্রাধান্য দিতে পারছেন না বলেই ছবি সফল হচ্ছে না। এজন্যই মূলত ছবি নির্মাণ কমে গেছে।

 

এ অবস্থার উত্তরণ কীভাবে সম্ভব?

ছবি নির্মাণ বাড়াতে হবে। একই সঙ্গে সিনেপ্লেক্সের সংখ্যাও বাড়ানো খুবই জরুরি। কারণ এখন সিনেপ্লেক্সের যুগ। মনে রাখতে হবে- ছবি দেখা এখন হাতের মুঠোয় চলে এসেছে। মানে মোবাইলেও সবাই ছবি দেখতে পারছে। এ অবস্থায় সময়ের পথে হাঁটতে হবে। নতুন প্রজন্মসহ সব শ্রেণির দর্শক যেভাবে আধুনিক ব্যবস্থায় ছবি দেখে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে সেই প্রদর্শন ব্যবস্থাই করতে হবে।

 

অভিযোগ রয়েছে দেশীয় গল্পের ছবি হচ্ছে না বলেই দর্শকগ্রহণযোগ্যতা পাচ্ছে না ছবি, কি বলবেন?

আসলেই এখন নিজস্ব গল্পের ছবির অভাব প্রকট। এখনকার ছবিতে পারিবারিক ইমোশন, যাপিত জীবনসহ সমাজ ও দেশের ছায়া যুক্ত গল্পের বড়ই অভাব। এখনকার ছবিতে দেশ ও পরিবারের নান্দনিক বিষয়গুলো তুলে  আনতে পারছি না। এ প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের চাহিদা ও তাদের জীবন সুষ্ঠুভাবে বেড়ে ওঠে এমন গল্পের ছবি নির্মাণ হয় না বললেই চলে। বর্তমান সময়ের সন্তানরা হত্যার প্রতিশোধ, রক্তারক্তির গল্পের ছবি দেখতে চায় না। তারা ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ ছবির মতো গল্প ও গান এখনো পছন্দ করে। আসলে দর্শক রুচিকে প্রাধান্য দিতে না পারলে সিনেমা হলে দর্শক ফেরানো যাবে না। আমাদের দেশে গল্পের অভাব নেই, রুচি আর চিন্তার দৈন্যতা রয়েছে বলেই দর্শকের মনের মতো ছবি নির্মাণ হচ্ছে না।

 

অভিনেতা হুমায়ুন ফরীদির আজ বিদায়ের দিন, তাকে নিয়ে কিছু বলুন-

তিনি ছিলেন আমাদের সবার প্রাণের মানুষ, শুধু অভিনেতা নয়, মানুষ হিসেবেও তিনি ছিলেন অলরাউন্ডার। একজন কর্মপাগল ও প্রাণবন্ত মনের মানুষ ছিলেন। তিনি আজীবন সবার হৃদয়ে ভালোবাসার ছায়া হয়ে থাকবেন। ফরীদি ভাই যেখানেই থাকুন সৃষ্টিকর্তা যেন তাকে শান্তিতে রাখেন সে প্রার্থনাই করছি।

সর্বশেষ খবর